বিসিএস চাকরিপ্রার্থীদের কাছে সোনার হরিণ। বিবাহযোগ্য কন্যা আছে—এমন অনেক পরিবারের কাছে কাঙ্ক্ষিত পাত্র। আবার বিসিএস বলতে অনেক সেবাপ্রার্থী জনগণের কাছে প্রায়ই দুর্বিনীত, ‘স্যার’ সম্ভাষণের জন্য লালায়িত ও দুর্নীতিপরায়ণ কর্মকর্তা এবং কদাচিৎ একজন সুশীল সেবকের প্রতিচ্ছবি ভেসে ওঠে। কিন্তু বিসিএস কর্মকর্তাদের বোবাকান্নার একটি দিক আছে, যা কেবল ভুক্তভোগীরাই জানেন। সম্প্রতি ওএসডিনামা নামে মুক্তচিন্তা প্রকাশিত শেখ আব্দুর রশীদের একটি বইয়ে সেই বোবাকান্নাকে তুলে ধরা হয়েছে।
কে এই শেখ আব্দুর রশীদ
১৯৮২ (নিয়মিত) ব্যাচে ১০টি জেনারেল ক্যাডারে মোট ৩৬১ জন কর্মকর্তাকে নেওয়ার জন্য মনোনীত করা হয়। ৩৬১ জনের সম্মিলিত মেধাতালিকায় চতুর্থ এবং প্রশাসন ক্যাডারের মেধাক্রমে প্রথম স্থান অধিকার করেন শেখ আব্দুর রশীদ। মেধাক্রম, বয়স, সততা, সুনাম, মেধা, বুদ্ধি—সব বিবেচনায় শেখ আব্দুর রশীদ ছিলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব হওয়ার দাবিদার। কিন্তু তাঁকে অতিরিক্ত সচিব হিসেবে চাকরি শেষ করতে হয়েছে; এর মধ্যে শেষ সাত বছর তিনি ছিলেন ওএসডি। শিক্ষাজীবনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে তিনি ছিলেন তাঁর বর্ষের সেরাদের একজন।
কী আছে ‘ওএসডিনামা’ বইয়ে
শেখ আব্দুর রশীদ তখন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অতিরিক্ত সচিব হিসেবে কর্মরত। ২০০৮ সালের ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের অভ্যন্তরে কয়েদিদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার জন্য গৃহীত সোয়েটার বুনন কর্মসূচি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রসচিবকে প্রধান অতিথি করা হয়। ব্যস্ততার কারণে তিনি ওই অনুষ্ঠানে না গিয়ে শেখ আব্দুর রশীদকে যেতে বলেন। নির্দেশ প্রতিপালনে তৎপর রশীদ অনুষ্ঠানে যোগ দেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে কারাগারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের অনুরোধে কারাবন্দীদের পরিবেশিত কৌতুক ও বিনোদন অনুষ্ঠানে তিনি কিছুটা সময় অবস্থান করেন। অনুষ্ঠানটিতে ‘জেলহত্যা দিবসের অবমাননা’ করা হয়েছে—এ অভিযোগ এনে তদন্তের জন্য শেখ আব্দুর রশীদের উত্তরসূরি অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি কোনো সাক্ষ্যপ্রমাণ ছাড়াই তাঁকে অভিযুক্ত করে। ২০০৯ সালের জানুয়ারি মাসে তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজু করা এবং তাঁকে ওএসডি করা হয়।