পহেলা বৈশাখ বাংলাদেশের এমনই উৎসব- যা ধর্ম, সমাজ, বয়স ও বৃত্তির সীমা পেরিয়ে সর্বত্র একাকার। নববর্ষের আনন্দ চিত্তে নতুনের জাগরণ ঘটায়। উৎসবের মধ্যে মানুষ নিজেকে খুঁজে পায় বৃহত্তরের গণ্ডিতে। রবীন্দ্রনাথ যেমনটা বলেছেন, ‘প্রতিদিন মানুষ ক্ষুদ্র দীন একাকী- কিন্তু উৎসবের দিনে মানুষ বৃহৎ; সেদিন সে সমস্ত মানুষের সঙ্গে একত্র হইয়া বৃহৎ, সেদিন যে সমস্ত মনুষ্যত্বের শক্তি অনুভব করিয়া মহৎ।’
পহেলা বৈশাখ নতুন আঙ্গিকে জীবন গড়ার শপথের দিন। এদিন রাষ্ট্রীয় কর পরিশোধের অঙ্গীকার গ্রহণের দিন ছিল একদা। দেনা-পাওনা হালনাগাদ করার দিন। ব্যবসায়ীদের হালখাতা খোলার দিন। পারস্পরিক সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্ব সৃষ্টির প্রেরণার দিন। একদা ফসলি কর পরিশোধের সঙ্গে মানুষের খাদ্য নিরাপত্তাবোধ জাগানোর দিন ছিল। বাঙালি জীবনে দীর্ঘকাল ধরে পহেলা বৈশাখের অনুষঙ্গ হচ্ছে ‘হালখাতা’। উদ্দেশ্য হচ্ছে ফসলি কর পরিশোধের আনন্দ প্রকাশ করা এবং ব্যবসায়ের হিসাব ও খাজনা ‘রাজকীয়’ খাতায় হালনাগাদ রাখা। এ উপলক্ষে রাজা-জমিদারকে প্রজারা তাদের সৃজনশীল পণ্য ও সূচিকর্ম উপহার দিত।