বছরের পর বছর ধরে মালয়েশিয়া উদ্ভাবনী চিকিৎসা প্রযুক্তি এবং বিশ্বমানের সেবা প্রদানের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। এশিয়ার কার্ডিওলজি হাব ও ক্যান্সার কেয়ার সেন্টার অব এক্সিলেন্স হিসেবে আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করেছে, যা কিনা মালয়েশিয়ার একীভূতকৃত স্বাস্থ্যসেবা সম্ভাবনাকে স্বাস্থ্যসেবা ভ্রমণকারীদের কাছে আরও গ্রহণযোগ্য করছে। বিশেষ করে, যে সকল বাবা-মা সন্তানদের জন্য উন্নতমানের চিকিৎসা দিতে চায় তাদের জন্য।
মালয়েশিয়া হেলথকেয়ার ট্রাভেল কাউন্সিলের (MHTC) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ দাউদ মোহাম্মদ আরিফ বলেন, “সকল শিশুর সুখী এবং সুস্থ জীবনযাপনের জন্য স্বাস্থ্যের সর্বোচ্চ ও মানসম্মত সেবা পাওয়ার অধিকার রয়েছে। মালয়েশিয়া হেলথকেয়ার সারা বিশ্ব থেকে স্বাস্থ্যসেবা ভ্রমণকারীদের এবং তাদের বাচ্চাদের মালয়েশিয়ায় সেবা নিতে আনন্দের সাথে স্বাগত জানাচ্ছে। শিশু রোগীদের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে স্বাস্থ্যসেবা প্রয়োজন। বিশেষ করে, কার্ডিয়াক এবং ক্যান্সারের রোগীরা, যাদেরকে আমাদের বিশেষজ্ঞদের নির্দেশনায় চাহিদা অনুযায়ী সময়মত যত্ন এবং পরামর্শ দিতে সক্ষম।”
উদাহরণস্বরূপ, ন্যাশনাল হার্ট ইনস্টিটিউট (ইনস্টিটিউট জান্টুং নেগারা বা আইজেএন), এটি একটি ডেডিকেটেড পেডিয়াট্রিক হার্ট সেন্টার, পেডিয়াট্রিক অ্যান্ড কনজেনিটাল হার্ট সেন্টার (পিসিএইচসি)। এখানে রয়েছে শিশু রোগীদের জন্য বিশেষ কার্ডিয়াক চিকিৎসা এবং যুগান্তকারী পদ্ধতি, যেখানে নবজাতক শিশুর মতো অল্পবয়সী শিশুদের চিকিৎসা দেওয়া হয়। ২০১৯ সালে, আইজেএন সফলভাবে দুটি সংযুক্ত-জমজ সন্তানের মধ্যে একটিতে প্রথম ধমনী সুইচ সার্জারি করেছে। তাদের আরেকটি কার্ডিয়াক সার্জারির মধ্যে ছিল, একটি ২.৩ কেজি ওজনের সবচেয়ে ছোট শিশুর উন্নত এবং মানসম্মত সার্জারি সফলভাবে সম্পন্ন করা।
আইজেএন-এর চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার দাতুক ড. আইজাই আজান বিন আব্দুল রহিম বলেন যে, “মালয়েশিয়ায় তারাই প্রথম যারা ট্রান্সক্যাথেটার পালমোনারি ভালভ (TPV) প্রতিস্থাপন করে শিশুদের মধ্যে পালমোনারি ভালভের কার্যকারিতা পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “আইজেএন-এ অর্জিত প্রতিটি মাইলফলক হলো, সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জনে সহযোগিতা করার ক্ষেত্রে আমাদের পেশাদারদের উৎসর্গতা, প্রতিশ্রুতি এবং আবেগের প্রমাণ । যা আমাদের সমস্ত রোগীদের স্বাস্থ্যের, বিশেষ করে কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্যের মান উন্নত করা।”
ক্যান্সার কেয়ার সেন্টার অফ এক্সিলেন্স হিসেবে ভালোমানের চিকিৎসা দেওয়ার কারণে মালয়েশিয়ায় ক্যান্সার চিকিৎসায় দীর্ঘদিন ধরে উচ্চ চাহিদা রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, মালয়েশিয়ায় ৮০% একুইট লিম্ফোব্লাস্টিক লিউকেমিয়া (ALL) শিশু নিরাময় হয়েছে।
বিদেশ থেকে আসা শিশু রোগীরা মালয়েশিয়া স্বাস্থ্যসেবা নেটওয়ার্কের সদস্য হাসপাতালের ৮৭টি হাসপাতালের মধ্যে ৩১টিতে চিকিৎসা নিতে পারবে। যার মধ্যে রয়েছে পেনটাল হসপিটাল কেএল (PHKL), সানওয়ে মেডিকেল সেন্টার (সানওয়ে) এবং সুবাং জয়া মেডিকেল সেন্টার (SJMC)। এই হাসপাতালগুলো বিভিন্ন পেডিয়াট্রিক সাব-স্পেশালিটির জন্য চিকিৎসা এবং সেবা প্রদানের জন্য উপযুক্ত। এখানে স্বাস্থ্যসেবার মধ্যে রয়েছে ক্যান্সার স্ক্রিনিং এবং রোগ নির্ণয়, সার্জারি, রেডিওথেরাপি, কেমোথেরাপি, জৈবিক থেরাপি এবং হরমোন থেরাপি। এবং কিছু পরিপূরক পরিষেবা, যেমন- কাউন্সেলিং, ফিজিওথেরাপি, ব্যাথা নিরাময়সহ সম্পূর্ণ পরিসরে বিভিন্ন পরিষেবা প্রদান করা হয়।
PHKL-এর কনসালটেন্ট, ক্লিনিকাল অনকোলজিস্ট ড. মালবিন্দর সিং সান্ধুর মতে, “ক্যান্সার থেরাপি সময়ের সাথে সাথে উন্নত হয়েছে এবং ক্যান্সারের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলোর উন্নত ব্যবস্থাপনাও হয়েছে, যা আজকের আধুনিক প্রযুক্তিগত অগ্রগতির জন্য সম্ভব হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “ক্যান্সার চিকিৎসার প্রতিকূল প্রভাবগুলো বেশ বিরল। এই অভিনব চিকিৎসাকে ধন্যবাদ জানাই যার মধ্যে রয়েছে টারগেটেড থেরাপি এবং ইমিউনোথেরাপির মতো নতুন রেডিয়েশন থেরাপি। এ রকম আরও কিছু থেরাপি রয়েছে, যেমন- ইনটেনসিটি-মডুলেটেড রেডিয়েশন থেরাপি (আইএমআরটি)/ভলিউমেট্রিক মড্যুলেটেড আর্ক থেরাপি (ভিএমএটি), স্টেরিওট্যাকটিক বডি রেডিয়েশন থেরাপি (এসবিআরটি)।
মোহাম্মদ দাউদ বলেন, “মালয়েশিয়ার হেলথকেয়ার ক্রমাগত তার সক্ষমতা জোরদার এবং নিশ্চিত করছে যে, এখানে শিশু রোগীরা সর্বোত্তম চিকিৎসা ও যত্ন পায়। বিগত কয়েক বছর ধরে, আমাদের হাসপাতালগুলো ১০টিরও বেশি দেশের অনেক আন্তর্জাতিক রোগীদের চিকিৎসা করেছে, যাদের বয়স ৬ মাসেরও কম, এবং যার কারণে আমরা এ সেক্টরের সাথে যুক্ত বিশেজ্ঞদের পাশাপাশি আমাদের রোগীদের কাছ থেকেও অসংখ্য অনুকূল প্রশংসা পেয়েছি।”
মালয়েশিয়া স্বাস্থ্যসেবা এবং এর পরিষেবা সম্পর্কে আরও তথ্যের জন্য, অনুগ্রহ করে ভিজিট করুন https://malaysiahealthcare.org অথবা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম www.facebook.com/MHTCMalaysia বা LinkedIn-এ মালয়েশিয়া হেলথকেয়ার ট্রাভেল কাউন্সিলকে ফলো করুন।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি