পর্নো তারকাকে অর্থ দেওয়া নিয়ে করা মামলায় সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন হয়েছে, চলছে বিচারের আয়োজন। চার বছর বিশ্ব ক্ষমতার প্রাসাদ হোয়াইট হাউসে থাকা ব্যক্তিকে এখন আসামি হিসেবে আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হবে। রীতিমতো অন্য আসামিরা যেভাবে আঙুলের ছাপ দিতে এবং ছবি তুলতে আদালতে আত্মসমর্পণ করেন ট্রাম্পকেও তেমনটিই করতে হবে। আসুন জেনে নেই, যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কোনো প্রেসিডেন্টকে কেন আসামি হতে হলো-
ঘটনা কী?
ডোনাল্ড ট্রাম্প মূলত এখন আগামী ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া নিয়ে প্রচারণায় ব্যস্ত। ঠিক এমন সময় তাঁকে ২০২১৬ সালের নির্বাচনের আগে পর্নো তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে তাদের মধ্যকার সম্পর্ক নিয়ে চুপ থাকতে ট্রাম্প বড় অংকের অর্থ দিয়েছিলেন বলেন অভিযুক্ত করা হলো। যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার জানা যায়, নিউইয়র্কের বিচারকেরা ট্রাম্পকে অভিযুক্ত করতে সম্মত হয়েছেন। এর মানে তারা মনে করছেন, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগের নেপথ্যে পর্যাপ্ত তথ্যপ্রমাণ মিলতেও পারে। তবে অভিযোগের বিস্তারিত এখনও প্রকাশিত হয়নি।
৭৬ বছর বয়সি ডোনাল্ড ট্রাম্প হয়তো আগামী মঙ্গলবার নিউইয়র্কের ম্যানহাটনের আদালতে হাজির হবেন।
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ কিসের?
স্টর্মি ড্যানিয়েলস বলছেন, ২০০৬ সালে ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল তার। কিন্তু ট্রাম্প বরাবরই তা অস্বীকার করে আসছেন।
২০১৬ সালে এসে ট্রাম্প যখন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী। ড্যানিয়েলস তখন তাদের সম্পর্কের গল্পটি মিডিয়ার কাছে বিক্রি করতে চেয়েছিলেন। ট্রাম্পের আইনজীবী মাইকেল কোহেন ড্যানিয়েলসের মুখ বন্ধ রাখতে তাকে এক লাখ ৩০ হাজার ডলার দেন। এ ধরনের লেনদেনের অর্থকে ‘হাস মানি’ বলা হয়।
এই কায়দার লেনদেন যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ নয়। কিন্তু বিপত্তিটা হয়েছে, ট্রাম্পের অ্যাকাউন্টে তা কীভাবে দেখানো হয়েছে, সেখানটায়। অভিযোগ উঠেছে, ট্রাম্প ব্যবসায়িক নথিপত্রে এই অর্থকে আইনি ফি হিসেবে দেখিয়ে দিয়েছেন। আর যেহেতু এই ঘটনা প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগমুহূর্তের, নির্বাচনী প্রচারণার কাজে লাগা অর্থের লেনদেনের বিধি ভঙ্গের অভিযোগও উঠতে পারে।
এখন এসব অভিযোগের বিচার হবে। ডোনাল্ড ট্রাম্পও আইনিভাবে তা লড়বেন। ট্রাম্প অবশ্য কোনো বেআইনি কিছু করেননি দাবি করে আসছেন, আর বলছেন, অভিযোগ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
অপরাধ প্রমাণ হলে কি জেলে যাবেন ট্রাম্প?
সাদা চোখে মনে হচ্ছে তেমন কিছু ঘটতে যাচ্ছে না। কিন্তু ট্রাম্পের কারাবরণের সম্ভাবনাও যে একেবারে নেই, তা নয়। অভিযোগের প্রায় ৩০ দফা রয়েছে বলে জানা গেছে। এর মধ্যে কোনোটি প্রমাণিত হলে, ট্রাম্পকে সর্বোচ্চ চার বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হতে পারে।
কিন্তু বাঘা বাঘা আইনজীবীরা অবশ্য ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে বলেছেন, শেষমেষ ট্রাম্পের কারাবরণ দেখার সম্ভাবনা একেবারেই ক্ষীণ। আর ট্রাম্পকে অন্য আসামিদের মতো হাতকড়া পরানো হবে কিনা তা নিশ্চিত জানা যায়নি।