বাড়িতে ছোট একটি শিশু থাকলে সারাক্ষণ চিন্তা লেগেই থাকে। কখন হামাগুড়ি দিয়ে কোথায় চলে গেল, কোথায় পড়ে ব্যথা পেল—প্রত্যেক মায়েরই এই এক দুশ্চিন্তা। শিশুকে সব সময় চোখে চোখে রাখা সম্ভব হয় না। তাই একেবারে নবজাত হোক কিংবা হাঁটতে শেখা শিশু, সবার ক্ষেত্রেই প্রথমে ঘরের সুরক্ষা নিশ্চিত করা জরুরি। কীভাবে নিজের ঘরকে শিশুর উপযোগী করা যায়, এ বিষয়ে বলছিলেন স্থাপত্যবিষয়ক প্রতিষ্ঠান মেটামরফিকের স্থপতি ফারাহ মৌমিতা।
• ঘরের ভেতরে নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য ‘চাইল্ড প্রুফিং’ করতে হবে। যেমন আসবাবের কোনার জন্য ‘কর্নার প্যাড’, দরজায় ‘ডোর স্টপার’, ঘরের নিচের দিকে প্লাগের ‘সকেট কাভার’, দরজায় ও সিঁড়িতে ছোট গেট বা ‘চাইল্ড প্রুফিং গেট’ বসাতে হবে। এসব বস্তুই বাংলাদেশে অনলাইনে কিনতে পাওয়া যায়। এসব কেনা সম্ভব না হলে ঘর থেকে কার্পেট, কোনাযুক্ত আসবাব সরিয়ে রাখতে হবে। ছিটকিনির ফুটোতে কাঠিজাতীয় কিছু ঢুকিয়ে বন্ধ রাখতে হবে। প্লাগের ফুটোয় ভালো আঠাযুক্ত টেপ লাগিয়ে দিতে হবে।
• শিশুরা ঘরের ছিটকিনি, হ্যাচবল যাতে নাগাল না পায় বা ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করতে না পারে, সেদিকেও দৃষ্টি রাখা উচিত। শিশুর ঘরের আসবাবগুলো যেন খুব বেশি উঁচু না হয়, হাঁটতে শেখা শিশু যেন সহজেই বিছানায় ওঠানামা করতে পারে, এমনটি হওয়া উচিত।
• ছোট আসবাবগুলো দেয়ালের সঙ্গে ফিট করে দিলে খেলার সময় শিশুর দুর্ঘটনা হওয়ার আশঙ্কা কম থাকে। যেকোনো ড্রয়ার বা ক্যাবিনেট তালাবদ্ধ করে বা এমনভাবে বন্ধ করে রাখতে হবে যেন শিশু সহজে খুলে না ফেলতে পারে।
• আসবাবের কোনাগুলো শিশুদের জন্য বিপজ্জনক। তাই ফোম বা নরম কাপড় দিয়ে আসবাবের কোনাগুলো ঢেকে দিতে হবে।
• শিশুর বিছানায় কখনোই অতিরিক্ত বালিশ, লেপ ও কম্বল জড়ো করে রাখবেন না। খেলার ছলে কিংবা ঘুমের মধ্যেও শিশু এসবের নিচে চাপা পড়তে পারে।
• হামাগুড়ি বা হাঁটতে শেখা শিশুর প্রথম ধাপই শুরু হয় ঘরের মেঝেতে। সে জন্য দরকার মসৃণ মেঝে। মেঝেতে কোনো ফাটল থাকলে বা অসমতল হলে সেগুলো দ্রুত মেরামত করতে হবে।
• মেঝেতে নরম কার্পেট ব্যবহার করলে শিশু পড়ে গেলে মারাত্মক ব্যথা পাওয়ার আশঙ্কা কম থাকে। সে ক্ষেত্রে এমন কার্পেট ব্যবহার করতে হবে যেন সেটি সহজে পিছলে না যায়।