তিন বছর আগেও আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেলের এমন অবস্থা ছিল যে শুকনা মৌসুমে শিশু-কিশোরেরা সেখানে খেলাধুলা করত। এ পথে বর্ষার মৌসুমেও ঠিকমতো পানিপ্রবাহ ছিল না। বর্জ্য ও পলি পড়ে হয়ে গিয়েছিল মৃতপ্রায়। তবে গত এক বছরে চ্যানেলটির চেহারা অনেকটা বদলেছে। এটি যে বুড়িগঙ্গা নদীর একটা শাখা, তা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেলের অবস্থান লালবাগের ইসলামবাগ, হাজারীবাগ ও কামরাঙ্গীরচর এলাকার মধ্যে। আদি চেহারায় ফিরতে থাকা চ্যানেলটিকে ঘিরে মহাপরিকল্পনা করছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। ইতিমধ্যে প্রায় ২২ কোটি টাকা খরচ করে সেখান থেকে বর্জ্য ও পলি অপসারণ করা হয়েছে। আরও ১৪ কোটি টাকা খরচ করে চলছে বর্জ্য অপসারণের প্রস্তুতি।
ডিএসসিসি একসময় মৃতপ্রায় হয়ে পড়া চ্যানেলটিকে হাতিরঝিলের আদলে দৃষ্টিনন্দন করে সাজাতে চায়। সে লক্ষ্য ইতিমধ্যে কাজও শুরু হয়েছে।
আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেলের সীমানা কামরাঙ্গীরচরের মুসলিমবাগ থেকে হাজারীবাগের রায়েরবাজার পর্যন্ত। প্রায় সাড়ে সাত কিলোমিটার দীর্ঘ চ্যানেলটি সচল করা গেলে লালবাগ, হাজারীবাগ, ধানমন্ডি ও কামরাঙ্গীরচর এলাকার জলাবদ্ধতা দূর হবে বলে জানাচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।
২০১৮ সালের ২৪ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কামরাঙ্গীরচরে নির্বাচনী জনসভায় আদি বুড়িগঙ্গা চ্যানেল উদ্ধার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। ওই সময় ঢাকা দক্ষিণ সিটির তৎকালীন মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকনকে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশ দেন তিনি। এরই ধারাবাহিকতায় চ্যানেলটি উদ্ধারের পরিকল্পনা হাতে নেয় সংস্থাটি।
পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সাবেক মেয়র ড্রোন দিয়ে এই চ্যানেলের ভিডিও চিত্র তৈরি করে একটি প্রতিষ্ঠানকে পরামর্শক হিসেবে নিযুক্ত করেন। তবে কাজের কাজ হয়নি। পরে বর্তমান মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস দায়িত্ব নেওয়ার পর চ্যানেল পুনরুদ্ধার ও সচল করতে নতুন করে কার্যক্রম হাতে নেন।