চিকিৎসকদের পদোন্নতি-পদায়ন নিয়ে স্থবিরতা সৃষ্টি হয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে। সম্প্রতি ৯০ জন চিকিৎসককে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি দিয়ে পদায়ন করে মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ। কিন্তু তাঁদের পদায়নে বাধা দেয় স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগ। এ নিয়ে মন্ত্রণালয়ের দুটি বিভাগের মধ্যে একরকম ‘স্নায়ুযুদ্ধ’ চলছে। এই বিরোধে আটকে গেছে ১০ হাজার ৯৩১ জন চিকিৎসকের পদোন্নতি ও পদায়ন। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সামগ্রিক চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যবস্থা।
পদায়ন না নিতে স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের জারি করা নির্দেশনাকে অ্যালোকেশন অব বিজনেস এবং সংবিধানের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব।
জানা গেছে, প্রায় তিন বছর বন্ধ থাকার পর সরকারি চিকিৎসকদের পদোন্নতির লক্ষ্যে বিভাগীয় পদোন্নতি কমিটি (ডিপিসি) প্রক্রিয়া শুরু করে গত জানুয়ারি মাসে। এর মধ্যে দুই দফায় ৯০ জন সহকারী অধ্যাপক হিসেবে পদোন্নতি পান। অ্যালোকেশন অব বিজনেস অনুসারে চিকিৎসকদের পদোন্নতি ও পদায়নের ক্ষমতা স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের। কিন্তু পদোন্নতিপ্রাপ্ত চিকিৎসকদের পদায়নে বাধা দেয় স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগ। এতে বন্ধ হয়ে যায় পদোন্নতির প্রক্রিয়া। ফলে চিকিৎসকদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও হতাশার সৃষ্টি হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক শামিউল ইসলাম বলেন, সারা দেশের মানুষের উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে। সেই নির্দেশনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে সহকারী অধ্যাপক পদে ৫ হাজার ৬৭৭ জন, সহযোগী অধ্যাপক পদে ২ হাজার ৫৪৬ জন এবং অধ্যাপক পদে ৫৬০ জনের তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। এ ছাড়া জুনিয়র ও সিনিয়র কনসালট্যান্ট পদে যথাক্রমে ১ হাজার ৬৬০ এবং ৪২২ জনের নাম পাঠানো হয়েছে। অধিদপ্তর থেকে এর আগে এত বড় তালিকা (১০ হাজার ৯৩১ জনের) মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়নি। এটি বাস্তবায়িত হলে দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থায় দৃশ্যমান পরিবর্তন হতো। কিন্তু স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের আপত্তিতে সেটি বাধাগ্রস্ত হয়েছে।
স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের ডিজির এসএমএস খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পদোন্নতিপ্রাপ্ত চিকিৎসকদের যোগদানপত্র গ্রহণ না করতে এসএমএসের মাধ্যমে মেডিকেল কলেজ অধ্যক্ষদের নির্দেশ দেন স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক টিটো মিঞা। ২ মার্চ পাঠানো এসএমএসে তিনি লিখেছেন, ‘সম্মানিত অধ্যক্ষ মহোদয়গণ, আপনাদের মনোযোগ আকর্ষণ করছি: পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সদ্য পদোন্নতিপ্রাপ্ত সহকারী অধ্যাপকবৃন্দের ছাড়পত্র প্রদান ও যোগদানপত্র গ্রহণসংক্রান্ত প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে নির্দেশক্রমে অনুরোধ জানানো হচ্ছে। উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের পরামর্শক্রমে উল্লিখিত নির্দেশনা প্রদান করা হলো।’