পদ্মা সেতুতে পাথরহীন রেললাইন নির্মাণের বাকি একটি স্লিপার। মাত্র ৭ মিটার দীর্ঘ স্লিপারটি বসালেই লাইন নির্মাণ সম্পন্ন হবে। তবে স্লিপারটির অভাবে ওই অংশটুকু ঢালাই করা যায়নি। সেতুর মাঝামাঝি ৫ নম্বর মুভমেন্ট জয়েন্টের ওই ইস্পাতের স্লিপারটি বসানো নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীদের কাছ থেকে এ তথ্য জানা গেছে। তবে তাঁরা শিগগিরই সমস্যাটি সমাধানের আশা করছেন।
নির্মাণকাজের প্রকৌশলী জহুরুল ইসলাম বলেন, জরুরি ভিত্তিতে চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান বিমানে করে স্লিপারটি এনেছে। তবে নকশা অনুযায়ী এর ছিদ্র মিলছে না। সূক্ষ্মভাবে রেললাইনটি নির্মাণ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। শুধু মুভমেন্ট জয়েন্টের বিশেষ এই স্লিপারটি বসানো বাকি।
প্রকৌশলীরা জানিয়েছেন, ৬ দশমিক ৬৮ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা রেলসেতুতে এমন ৮টি মুভমেন্ট জয়েন্ট রয়েছে। বাকি ৭টি যথাযথভাবে স্থাপন করা হয়েছে। যেটি বাকি রয়েছে, সেটিও শিগগির স্থাপিত হবে। এর আগে রেললাইন ঢালাই করা যাবে না।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মূল সেতুতে ১১ হাজার ১৪০টি স্লিপার স্থাপিত হয়েছে। মুভমেন্ট জয়েন্টের ইস্পাতের ৮টি স্লিপার ছাড়া বাকি সবগুলো কংক্রিটের তৈরি। এগুলো ফরিদপুরের ভাঙ্গা পুরোনো রেলস্টেশনের পাশে স্থাপিত কারখানায় তৈরি করেছে চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
একই সঙ্গে পদ্মা সেতুর রেল সংযোগ প্রকল্পের ১৭২ কিলোমিটার রেললাইন তৈরির জন্য সব স্লিপার একই কারখানায় তৈরি হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে বিশেষ তাপমাত্রায় মুভমেন্ট জয়েন্টের ইস্পাতের স্লিপারগুলো তৈরি করে আনা হয় চীন থেকে। বাকি থাকা একমাত্র স্লিপারটি পৌঁছানোসাপেক্ষে দু-এক দিনের মধ্যে বাকি অংশের কংক্রিটিং করা হবে।
সূত্র জানায়, ৭২ ঘণ্টা কিউরিংয়ের জন্য অপেক্ষার পর ৩০ মার্চ মাওয়া থেকে পদ্মা সেতু অতিক্রম করে পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চলবে ভাঙ্গা পর্যন্ত। রাজধানী থেকে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের বড় চ্যালেঞ্জ ছিল সেতুতে যানবাহন চালু রেখেই নিচতলায় সূক্ষ্মভাবে টেকসই ও পাথরবিহীন রেললাইন নির্মাণ। এটিও এখন সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ার পথে রয়েছে।
পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের ব্যবস্থাপক-১ ব্রিগেডিয়ার সাঈদ আহমেদ বলেন, ‘পদ্মা নদীতে সেতু নির্মাণ চ্যালেঞ্জিং কাজ ছিল। আবার এখানে রেল সংযোগ করা আরেকটি চ্যালেঞ্জিং কাজ। এখানে আমরা সর্বোচ্চ মান নিশ্চিত করেছি।’
তাঁর ভাষ্য, কংক্রিট আনার আগে, প্রেসিং করার সময় প্রকৌশলীরা প্রতিটা বিষয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ব্যবহার করছেন। রেললাইন স্থাপনের কাজের অগ্রগতি প্রায় ৯৯ শতাংশ।