দিন দিন বন ধ্বংসের ফলে বৃক্ষশূন্য হয়ে পড়ছে পাহাড়। ফলে নষ্ট হচ্ছে প্রাকৃতিক ভারসাম্য, জলের আধার। এমন অবস্থার মধ্যে নিজেদের উদ্যোগে একটি শতবর্ষী প্রাকৃতিক বন টিকিয়ে রেখেছেন বান্দরবানের চিম্বুক পাহাড়ে ম্রো জনগোষ্ঠীর এক পাড়াবাসী।
জেলা শহরে থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরে বান্দরবান-থানচি সড়কের পাশে লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নের লেমুপালং মৌজায় কাপ্রু ম্রো পাড়ায় রয়েছে এই প্রাকৃতিক বন। এর আয়তন প্রায় ২০০ একর।
আশপাশে এ ধরনের প্রাকৃতিক বন আর কোথাও নেই। নানা প্রজাতির গাছগাছালি ও উদ্ভিদ রয়েছে এই প্রাকৃতিক বনে। রয়েছে কয়েক প্রজাতির শতবর্ষী গাছও। গ্রীষ্মকালে যেখানে তীব্র পানির সংকটে ভোগে গোটা চিম্বুক পাহাড়বাসী, সেখানে সারাবছরই পানি থাকে একমাত্র এই প্রাকৃতিক বনের কারণে।
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় দুই হাজার ফুট উপরে পাহাড়ের এই কাপ্রু ম্রো পাড়ায় বসবাস করছে ৫২টি পরিবার। পাড়াটি ঠিক কত সালে প্রতিষ্ঠা হয়েছে সঠিকভাবে বলতে পারেননি বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিরাও।
তাদের ধারণা, পাড়ার বয়স দেড় থেকে দুইশ বছর হতে পারে। এই বন থেকে পাড়াবাসীর কারও গাছ কাটার নিয়ম নেই। তবে ঘর নির্মাণ ও সামাজিক কাজের প্রয়োজনে পাড়াপ্রধান অনুমতির মাধ্যমে প্রয়োজনমত বাঁশ কাটতে পারে পাড়াবাসী।রোববার কাপ্রু ম্রো পাড়ার প্রাকৃতিক বনের ভিতরে গিয়ে দেখা যায়, শতবর্ষী বিশাল গাছগুলো নিচের দিকে শেকড় গেঁড়ে যেন একটি বিশাল বটবৃক্ষ হয়ে আছে। সব গাছের নামও জানাতে পারেননি পাড়াবাসী। শুকনো কাঠের মত ঠাঁই দাঁড়িয়ে আছে অনেক বড় মৃত গাছও।
পাড়াবাসী জানালেন, বেশি বয়স হওয়ায় মারা গেছে গাছগুলো। তবু কাটার নিয়ম নেই। অন্যদিকে গোটা পাহাড়টাই বড় বড় পাথরে ঢাকা। শুষ্ক মৌসুমেও পাথরে ফাঁকে ফাঁকে রয়েছে পানির প্রবাহ।
পাড়ার বাসিন্দা লংঙি ম্রো বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ২০১৬ সালে ঢাকা থেকে পরিবেশ কর্মীদের একটি দল এই প্রাকৃতিক বনে জরিপ করতে আসছিল। কয়েকদিন জরিপ শেষে তারা ৯৯টি প্রজাতির গাছ পাওয়ার কথা জানিয়েছিল।