চলছে বিশ্ব গ্লুকোমা সপ্তাহ। প্রতিবছর বিশ্বজুড়ে ১২-১৮ মার্চ সপ্তাহটি পালন করা হয়। সপ্তাহটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘আপনার দৃষ্টি রক্ষা করুন, সুন্দর পৃথিবী উপভোগ করুন’।
গ্লুকোমায় আক্রান্ত হলে অন্ধত্ব বরণ করতে হয়। অন্ধত্ব মানবজীবনের একটি অভিশাপ। এই ভয়াবহ রোগ থেকে দূরে থাকতে প্রয়োজন সবার সচেতনতা। প্রতিবছর গ্লুকোমার ভয়াবহতা সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করতেই আয়োজন করা হয় নানা কর্মসূচির।
গ্লুকোমাজনিত অন্ধত্বের কোনো প্রতিকার নেই। সচেতনতাই এ রোগ প্রতিরোধের একমাত্র উপায়। গ্লুকোমা অনিরামযোগ্য অন্ধত্বের প্রধানতম কারণ। বিশ্বজুড়ে প্রায় আট কোটি মানুষ গ্লুকোমায় আক্রান্ত, যাঁদের বেশির ভাগই এশিয়ার স্বল্পোন্নত দেশগুলোর মানুষ। ৯০ শতাংশ মানুষই এ রোগ সম্পর্কে জানেন না।
গ্লুকোমা হলো চোখের প্রধান স্নায়ুরজ্জুর (অপটিক নার্ভ) একটি রোগ, যেখানে স্নায়ুরজ্জু ধীরে ধীরে ক্ষয়প্রাপ্ত হতে থাকে, দৃষ্টির পরিসীমা ক্রমাগত সংকুচিত হতে থাকে। আক্রান্ত ব্যক্তি সঠিকভাবে ও সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করলে অন্ধত্ব বরণ করেন।
এ রোগের সঠিক কারণ বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই জানা যায়নি। তবে চোখের অন্তর্গত উচ্চ চাপ প্রধানতম ঝুঁকি। অন্য যেসব ঝুঁকির কারণে এ রোগ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, তা হলো বংশগত ইতিহাস (মা-বাবা, ভাইবোন এ রোগে আক্রান্ত হলে তাঁদের ক্ষেত্রে আশঙ্কা রয়েছে), ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, মাইনাস বা প্লাস পাওয়ার, মাইগ্রেন, চোখের আঘাত, চোখের অন্যান্য রোগ এবং চিকিৎসকের উপদেশ ছাড়া অনিয়ন্ত্রিতভাবে স্টেরয়েডজাতীয় চোখের ড্রপ ব্যবহার।
গ্লুকোমা সাধারণত বয়সজনিত রোগ। তাই চল্লিশের পর গ্লুকোমা আছে কি না, তা পরীক্ষা করে নিশ্চিত হওয়া জরুরি। চোখের চাপ, স্নায়ুরজ্জুর অবস্থা ও দৃষ্টির পরিসীমা পরীক্ষা করে খুব সহজেই গ্লুকোমা নির্ণয় করা যায়। কখনো কখনো জন্মগতভাবেও এ রোগ হতে পারে। সে ক্ষেত্রে জন্মের পর শিশুর চোখ থেকে পানি পড়া, আলোর প্রতি সংবেদনশীলতা, অস্বচ্ছ মণি ও অক্ষিগোলক বড় হতে থাকা—এসব লক্ষণ দেখামাত্র শিশুর চোখ গ্লুকোমায় আক্রান্ত কি না, তা পরীক্ষা করিয়ে নিতে হবে।