অনেক পুরুষেরই ভাবনা যে, সন্তান জন্ম দেওয়ার ক্ষেত্রে তাঁদের বয়স কখনওই বাধা হতে পারে না, এ ক্ষেত্রে কেবল মেয়েদের বয়সই গুরুত্বপূর্ণ। সন্তানের জন্ম না হোক, বেশি বয়সে সঙ্গম যে সম্ভব, তা বলেছেন কবির সুমনও। কিন্তু তা কি সত্যিই সম্ভব?
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পুরুষদের শুক্রাণুর সংখ্যা ও গুণগত মান কমতে থাকে। সম্প্রতি এক গবেষণায় বলা হয়েছে বেশি বয়সে বাবা হলে সঙ্গীর ও হবু সন্তানের জীবনে ঝুঁকি আসতে পারে। ম্যাচুরিটাস জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাটিতে স্বামী-স্ত্রীর বয়স অন্তঃসত্ত্বা মহিলা ও হবু শিশুর স্বাস্থ্যের উপর কেমন প্রভাব ফেলে তা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। ৪০ বছর ধরে গবেষণাটি চালানো হয়।
মহিলাদের ক্ষেত্রে ঋতুবন্ধের পরে সন্তানধারণের কোনও সম্ভাবনা থাকে না। কিন্তু ছেলেদের শরীরে শুক্রাণু তৈরির প্রক্রিয়া কখনও বন্ধ হয় না। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, তাঁদের মহিলাদের মতো ‘বায়োলজিক্যাল ক্লক’ নেই। পুরুষদের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের শুক্রাণুগুলি জেনেটিক মিউটেশনের মধ্যে দিয়ে যায়। ফলে শুক্রাণুর ডিএনএ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। পুরুষদের সন্তান জন্ম দেওয়ার ক্ষমতা প্রভাবিত হয়। শুধু তা-ই নয়, সেই বয়সে যদি তিনি সন্তানের জন্ম দিয়েও ফেলেন, তা হলে শিশুর স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রেও খারাপ প্রভাব পড়তে পারে। এ ক্ষেত্রে শিশুদের স্নায়ুতন্ত্রজনিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ৪৫ বছরের পর পুরুষদের বাবা হওয়ার ক্ষমতা কমে যায়, শুধু তা-ই নয়, তাদের সঙ্গীদের গর্ভকালীন ডায়াবিটিস, প্রিক্ল্যাম্পসিয়া এবং সময়ের আগেই শিশুজন্মের মতো সমস্যাও হতে পারে। বাবার বয়স অনেক বেশি হয়ে গেলে শিশু জন্মের সময় তার ওজন স্বাভাবিকের তুলনায় কম হওয়া, জন্ম থেকেই হার্টের সমস্যা, নবজাতকের খিঁচুনির সমস্যা দেখা দিতে পারে দাবি করেছেন গবেষকরা। বয়স বাড়ার সঙ্গে শুক্রাণুর গুণগত মান কমে যায়, আর সেই কারণেই এই সব সমস্যার ঝুঁকি বাড়ে, এমনই মত গবেষকদের।