কেন হয় ঘাড়ব্যথা
- বয়স হলে ঘাড়ের টিস্যু ক্ষয় হয়ে যায়। দীর্ঘদিন ধরে ল্যাপটপের সামনে বসে যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের এ সমস্যা বেশি হয়। এর কারণে ঘাড়ের মধ্যকার হাড়ে ফাঁক থেকে যায়। যাঁদের সারভাইকাল স্পন্ডেলাইটিস (ঘাড়ে মেরুদণ্ডের অংশে হাড়ক্ষয়) রয়েছে, তাঁদেরও ঘাড়ে ব্যথা হতে পারে।
- কোনো কারণে স্পাইনাল কর্ডের কোনো টিস্যু ফুলে গেলে স্লিপ ডিস্ক হতে পারে। সেখান থেকেও ঘাড়ে ব্যথা হয়।
- কোনো দুর্ঘটনায় ঘাড়ে আঘাত পেলে সেই ব্যথা বহুদিন স্থায়ী হয়। পেশিতে টান লাগলে মাঝেমধ্যেই তখন ব্যথা বাড়ে।
- বসার ভঙ্গিতে ত্রুটি থাকলে ঘাড়ে ব্যথা হতে পারে। বাঁকাভাবে শুয়ে থাকলে ঘাড়ে চাপ পড়ে, সেখান থেকেও ঘাড়ব্যথা হতে পারে। এ ধরনের সমস্যা হলে অন্যদিকে ঘাড় ঘোরানো অসম্ভব হয়ে পড়ে।
- মানসিক অবসাদ ও দুশ্চিন্তা থেকেও ঘাড়ের ব্যথা হতে পারে।
- অনেক সময় বিছানায় শুয়ে বই পড়া, টিভি দেখা বা উপুড় হয়ে ল্যাপটপে কাজ করা থেকেও ঘাড়ের পেশিতে টান লেগে ব্যথা হয়।
কারা ঝুঁকিতে
বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এই রোগের ঝুঁকি বাড়ে। সাধারণত ৪০ বছর বয়সের পর থেকে স্পন্ডাইলোসিসের পরিবর্তন শুরু হয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে এর আগেও হাড়ের ক্ষয় শুরু হয়ে যায়। সামনে ঘাড় ঝুঁকিয়ে কাজ করতে হয়, এমন সব পেশার মানুষদের এ রোগ বেশি দেখা যায়। শুধু চেয়ার–টেবিলে বসে কাজ করেন, যেমন ব্যাংকার, নির্বাহী; কম্পিউটারে একনাগাড়ে কাজ, ঘাড়ে ঝাঁকুনি লাগে, এমন পেশা, যেমন মোটরসাইকেল বা সাইকেলচালকদেরও এ রোগ হতে পারে।
লক্ষণ
ঘাড়ের ব্যথা অনেক সময় কাঁধ থেকে ওপরের পিঠ, বুক, মাথার পেছনে বা বাহু হয়ে হাত পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়তে পারে। ঘাড় থেকে হাতে নেমে আসা স্নায়ু বা নার্ভের ওপর চাপ পড়লে পুরো হাতেই ব্যথা হতে পারে। সার্ভিক্যাল স্পন্ডোলাইসিসের সমস্যা সবচেয়ে গুরুতর হয়ে দেখা দেয় যখন স্পাইনাল কর্ডের ওপর চাপ পড়ে। হাত–পায়ে দুর্বলতা, হাঁটতে অসুবিধা হতে পারে। পায়খানা-প্রস্রাব বন্ধ হওয়ার মতো অবস্থাও হতে পারে। ঘাড় নাড়াতে গেলে ব্যথা লাগে। ডানে–বাঁয়ে ঘাড় ঘোরাতে সমস্যা হয়। ঘাড়ে জ্যাম ধরে থাকে।
ব্যথার সঙ্গে হাতে, বাহুতে হতে পারে ঝিনঝিন, শিরশির, অবশ ভাব, সুচ ফোটানোর অনুভূতি। সেই সঙ্গে হাত দিয়ে কোনো কাজ করতে অসুবিধা হয়।
পেশিতে টান পড়ার কারণেও ঘাড়ে ব্যথা হয়। স্নায়ু সংকোচন, অর্থাৎ ঘাড়ের ভার্টিব্রায় হার্নিয়েটেড ডিস্ক বা হাড়ের উৎস মেরুদণ্ডের কর্ড থেকে বেরিয়ে আসা স্নায়ুর ওপর চাপ পড়ার কারণেও ব্যথা হয়। বিভিন্ন সময় আঘাতের কারণে এমনটা হতে পারে। রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, মেনিনজাইটিস বা ক্যানসারের মতো কয়েকটি রোগেও হতে পারে ঘাড়ব্যথা।