সুস্থ থাকার জন্য বয়স ও উচ্চতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ওজন থাকা আবশ্যক। ওজন বেশি থাকলে আমাদের দেশে সাধারণভাবে বলা হয় ‘স্বাস্থ্য ভালো’। বাস্তবতা হলো, অতিরিক্ত ওজন বরং স্বাস্থ্য ‘খারাপ’ থাকার নিদর্শন।
ঝুঁকিগুলো জেনে নিন
অতিরিক্ত ওজনে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদ্রোগ ও স্ট্রোকের মতো রোগের ঝুঁকি বাড়ে। অল্পতেই হাঁপিয়ে উঠতে পারেন অতিরিক্ত ওজনের মানুষেরা। গলায় চর্বি জমে গেলে ঘুমের সময় শ্বাস–প্রশ্বাসেরও ব্যাঘাত ঘটে।
কেন ওজন বাড়ছে?
ফাস্ট ফুড, কোমল পানীয় কিংবা বিরিয়ানিজাতীয় খাবার খাওয়ার প্রবণতা বাড়ছে। ঝটপট ফরমাশ দিয়ে খাবার আনা হচ্ছে। যখন-তখন খাবার খাওয়ার প্রবণতাও আছে। শিশুদের ক্ষেত্রে মন্দ খাদ্যাভ্যাসের সঙ্গে ডিজিটাল যন্ত্রে সময় কাটানোর দায়ও রয়েছে।
খাদ্যাভ্যাস
স্বাদের চেয়ে স্বাস্থ্যের প্রতি মনোযোগ বাড়ান। শৈশব থেকেই চাই সুষম খাদ্যাভ্যাস। বিরিয়ানি খেতেই হবে? সুগন্ধি চালের ভাতের সঙ্গে মাংসের ঝোল হোক না একদিন। খেয়েই দেখুন। স্বাদে ভিন্নতা আসবে। দুই বন্ধু পাস্তা খাবেন বলে ঠিক করেছিলেন? একজনের পাস্তা দুজন ভাগ করে খান। ক্যালরি গ্রহণ হবে অর্ধেক, স্বাদগ্রন্থিও একেবারে বঞ্চিত থাকবে না।
খেয়াল রাখুন
- শর্করা ও তেল-চর্বির পরিমাণ কমিয়ে দিন।
- তেলেভাজা খাবার কিংবা প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়ার অভ্যাস বর্জন করুন। নুডলস, পাস্তা, পিৎজা, চিপস, বিস্কুট, চকলেট না খাওয়াই ভালো।
- ভাত–রুটির পরিমাণ কমিয়ে শাকসবজি ও ফলমূল খেতে হবে বেশি করে।
- হুটহাট ক্ষুধা পেলেই ভারী নাশতা নয়, বরং একটা ফল খেয়ে নিন।
- সস, মেয়োনেজ, পনিরও কমিয়ে আনুন। তেঁতুলের টক চাটনি (চিনি কম দিয়ে) কিংবা বাড়তি কোনো মসলা দিয়ে খাবার খেয়ে দেখুন। স্বাদ পাবেন।
- চা-কফির চিনি আপনার শত্রু। এক চামচ চিনি সারা দিনের ক্যালরির একটা বিশাল জায়গা নিয়ে নেবে। তাই ধীরে ধীরে কমিয়ে আনুন মিষ্টি পানীয়ের অভ্যাস।
- কোমল পানীয়কে একেবারে বিদায় জানান। আইসক্রিম কিংবা মিষ্টান্নের জায়গা নিতে পারে মজাদার সালাদ।
কায়িক শ্রম এবং মনের জোর
ঘরে-বাইরে হাঁটাচলা বাড়ান। কিছুটা পথ হাঁটা কিংবা দুটো তলা সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামাই আনবে ইতিবাচক পরিবর্তন। সাইকেল চালানো ও সাঁতার কাটা দারুণ ব্যায়াম। দিনে কিংবা রাতে শরীরচর্চা করুন। তবে ওজন কমাতে তাড়াহুড়া করবেন না। সহজ পরিকল্পনায় ছোট ছোট লক্ষ্য স্থির করুন। খাবার খাওয়া একেবারে বাদ দেবেন না। মাত্রাতিরিক্ত শরীরচর্চাও করবেন না। মনের জোর রাখুন। কারও নেতিবাচক মন্তব্যের জন্য নয়, নিজের জন্যই নিজের যত্ন নিন। কোনো রোগের জন্যও ওজন বাড়তে পারে, তাই প্রচেষ্টায় সফল না হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।