কীসের বিনিময়ে কর্নেল অলির মিথ্যাচার?

বিডি নিউজ ২৪ এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক প্রকাশিত: ০৫ মার্চ ২০২৩, ২০:৩১

২০১২ সালের এক সকালে ডেইলি স্টার পত্রিকা খুলেই এর প্রথম পৃষ্ঠার অর্ধেক জুড়ে ছবিসহ এক বিরক্তিকর খবর চোখে পড়েছিল, যাতে উল্লেখ ছিল কর্নেল অলি নামক এক মুক্তিযোদ্ধা কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে কয়েক একর জমি দখল করে সেখানে স্থাপনা গড়েছেন।


তখনই স্বপ্রণোদিত রুল জারি করায় কর্নেল অলি আমাদের আদেশক্রমে আমার নেতৃত্বের বেঞ্চে হাজির হন। তার মুখে কোনো লজ্জার ভাব ছিল না। মনে হচ্ছিল, মনে মনে ভাবছেন কত লোকই তো সরকারি ভূমি দখল করে, আমিও তাই করেছি, তাতে কী এমন হয়েছে? হয়তো এ-ও ভাবছিলেন এই বিচারপতি বেশি বাড়াবাড়ি করছেন। প্রথম আধাবেলা কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে থেকে বিরতির পর কার্যক্রম শুরু হলে বুঝতে পারলাম তখন তিনি বেশ লজ্জাকাতর, সম্ভবত বহু লোকের উপস্থিতিতে আধাবেলা অভিযুক্তের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে থাকার কারণে। প্রথমেই জিজ্ঞেস করেছিলাম ডেইলি স্টার পত্রিকায় প্রকাশিত ছবিসহ প্রতিবেদনটি সত্যি কিনা? জবাব না দিয়ে তিনি মাথা নিচু করে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর দ্বিতীয়বার বলেছিলাম জবাব না পেলে ধরে নেব সংবাদটি সত্য এবং ভূমি দখলের দায়ে তাকে জেলে পাঠানো হবে। এবার ভয়ার্ত মুখেই বলেছিলেন শিগগির তার স্থাপনা ভেঙ্গে জমি থেকে সরে যাবেন। তিনি মুক্তিযোদ্ধা কিনা, সে প্রশ্নের জবাবে সগর্বে বলেছিলেন ‘নিশ্চয়ই’। ভূমিদস্যু হিসাবে অভিযুক্ত হয়ে মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় দিতে তার লজ্জা হচ্ছে কিনা, সে প্রশ্নের জবাব না দিয়ে বললেন তিনি এখনই স্থাপনা ভাঙ্গার নির্দেশ দেবেন। আমি বলেছিলাম তার এই সিদ্ধান্ত আমাকে একজন মুক্তিযোদ্ধাকে জেলে পাঠানোর দায় থেকে রক্ষা করল। পরবর্তীতে কক্সবাজারের ডেপুটি কমিশনার এবং পুলিশ সুপার আমাদের জানিয়েছিলেন কর্নেল অলি তার বেআইনি দখল এবং স্থাপনা গুড়িয়ে ফেলেছেন। ডিসি এবং পুলিশ সুপারকে ভর্ৎসনা করেছিলাম এই বলে যে তারা কেন আগে ব্যবস্থা নেননি? তারা বলেছিলেন আদালতের আদেশ না পেলে কর্নেল অলির স্থাপনা ভাঙ্গা কঠিন হতো। তারা যা বলতে চেয়েছিলেন, কিন্তু মুখ খুলে বলেননি, তা হলো কর্নেল অলি অত্যন্ত প্রভাবশালী লোক, যার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া তাদের জন্য সহজ ছিল না।


সম্প্রতি বীরউত্তম খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর রফিক পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে বলেছেন যে ১৯৭১-এ চট্টগ্রামে কর্মরত তৎকালীন মেজর জিয়া ২৫ মার্চ তারিখের রাত ১১.৪৫ মিনিটে যখন ‘সোয়াত’ নামক জাহাজ থেকে পাকিস্তানি সমরাস্ত্র খালাসের জন্য পাকিস্তানি সামরিক জিপে করে এগুচ্ছিলেন, তখন মেজর রফিক তাকে সে পথ থেকে বিরত থাকতে বললে জিয়া মেজর রফিককে ভয় দেখিয়ে বলেছিলেন তিনি (জিয়া) অবশ্যই পাকিস্তানি অস্ত্র খালাস করবেন কেননা তার ওপর কর্নেল জানজোয়ার নির্দেশ রয়েছে। এর পর জিয়া সোয়াত জাহাজের দিকে ছুটে গিয়েছিলেন, যদিও তার ইচ্ছা পূরণ হয়নি, কারণ পথিমধ্যে বাঙালি সৈন্যরা জিয়ার পথ রুদ্ধ করেছিলেন।

মেজর রফিক ১৯৭২ সালেই ‘পিপলস ভিউ’ নামক একটি সাময়িকীতে এই কথাগুলো লিপিবদ্ধ করেছিলেন। পরবর্তীতে ১৯৭৪ সালে তিনি বই আকারে সেগুলো লিখেন। ১৯৮১ সালে মেজর রফিকের বইয়ের দ্বিতীয় সংস্করণেও একই কথা লিপিবদ্ধ করা হয়।


১৯৮১ সালে জেনারেল এরশাদ জিয়াকে স্বাধীনতার ঘোষক বলে আইন প্রণয়ন করতে চাইলে মেজর রফিকের পুস্তকের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছিল যে ব্যক্তি ২৫ মার্চ রাত্রিতে পাকিস্তানি সমরাস্ত্র উদ্ধারে যাচ্ছিল, তাকে কী করে স্বাধীনতার ঘোষক বলা যায়? জিয়ার সাফাই গেয়ে মেজর রফিককে মিথ্যাচারী হিসাবে আখ্যায়িত করেছিলেন, কুখ্যাত রাজাকার শাহ আজিজ এবং কর্নেল আকবর, জিয়া যাদের প্রধানমন্ত্রী এবং মন্ত্রী পদে বসিয়ে মুক্তিযুদ্ধকে অবমাননা করেছিলেন।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us