আগের দুই মাসের ধারাবাহিকতায় চলতি মার্চে টানা তৃতীয় দফায় বিদ্যুতের দাম ৫ শতাংশ বেড়েছে। তাতে বিদ্যুৎ–নির্ভর শিল্পকারখানায় পণ্যের উৎপাদন খরচ আরেক দফা বাড়বে। এতে অনেক পণ্যই আগের চেয়ে বেশি দামে কিনতে হবে ভোক্তাদের।
কয়েকটি খাতের উদ্যোক্তারা বলেন, ডলার–সংকটে কাঁচামাল আমদানিতে ঋণপত্র (এলসি) খুলতে এখনো সমস্যা হচ্ছে। জানুয়ারি থেকে প্রতি মাসেই বিদ্যুতের দাম বাড়ছে। গত মাসে গ্যাসের দাম একলাফেই ১৭৮ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। অন্যদিকে উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে দেশের মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমেছে। বৈশ্বিক মন্দার শঙ্কায় পণ্য রপ্তানির ক্রয়াদেশ আসার হারও তুলনামূলক কম। সব মিলিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করা কঠিন থেকে কঠিনতর হয়ে উঠেছে।
বিদ্যুৎ বিভাগ গত মঙ্গলবার রাতে বিদ্যুতের দাম ৫ শতাংশ বাড়ানোর প্রজ্ঞাপন জারি করে। এতে ক্ষুদ্র শিল্পের গ্রাহকদের জন্য গড় বিদ্যুতের দাম ৯ টাকা ৪১ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৯ টাকা ৮৮ পয়সা করা হয়। আর বাণিজ্যিক ও অফিসের জন্য গড় দাম ১১ টাকা ৩৬ পয়সা থেকে বাড়িয়ে করা হয় ১১ টাকা ৯৩ পয়সা। এসব গ্রাহক মূলত নিম্ন চাপের বিদ্যুৎ ব্যবহার করেন। বড় শিল্প-গ্রাহকদের ব্যবহারের পরিমাণ বেশি। মধ্যম চাপের শিল্প-গ্রাহকদের গড় দাম ৯ টাকা ৪৩ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৯ টাকা ৭২ পয়সা করা হয়েছে।
বিপুল ভর্তুকি কমাতে গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম দফায় দফায় বাড়ানো হচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মাসে মাসে দর সমন্বয় হতে পারে। দাম বাড়াতে এখন আর গণশুনানির প্রয়োজন হচ্ছে না। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনকে (বিইআরসি) পাশ কাটিয়ে নির্বাহী আদেশে বাড়ানো হয় বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম।
গাজীপুরের টঙ্গীর মাজুখানে এক্সক্লুসিভ ক্যান নামের কারখানায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের রঙের ছোট-বড় ক্যান, আইসক্রিমের বক্স, মবিলের ক্যান, ওষুধের বোতল ইত্যাদি তৈরি হয়। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ নাসির গতকাল প্রথম আলোকে বললেন, ‘পিক আর অফপিকের হিসাব করলে মার্চ থেকে বিদ্যুতের দাম ইউনিটপ্রতি প্রায় ১০ টাকা বাড়বে। তাতে আমাদের কারখানায় বিদ্যুতের ব্যবহার একই থাকলে আগামী মাসে চার লাখ টাকা বেশি বিল আসবে।’