অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে বাজারে মুদ্রার সরবরাহ বাড়ানো হয়েছে। এতে নগদ টাকার চাহিদা বেড়েছে। এই চাহিদা মেটাতে বাজারে ছাড়া হয়েছে রেকর্ড পরিমাণ ছাপানো টাকা। বিভিন্ন সম্পদের বিপরীতে ও প্রণোদনার আওতায় এসব টাকা ছেড়ে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে সচল রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে সরকারের মাত্রাতিরিক্ত ঋণ নেওয়ার কারণেও বাজারে নগদ টাকার চাহিদা বেড়েছে। এ কারণে নোট ছাড়ার প্রবণতা বেড়েছে। এতে মূল্যস্ফীতির হার চাপে রয়েছে। গত বছরের জুলাই-নভেম্বরে বাজারে নগদ ছাড়া হয়েছে সাড়ে ১৮ হাজার কোটি টাকা। আগের বছরের একই সময়ে ছাড়া হয়েছিল ১২৯ কোটি টাকা। করোনার সময়ে সর্বোচ্চ ৩৮ হাজার কোটি টাকা বাজারে ছাড়া হয়।
গত নভেম্বর পর্যন্ত সরবরাহ করা মোট মুদ্রা ১৭ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ছাপানো নোট আকারে বাজারে আছে ২ লাখ ৭৫ হাজার কোটি টাকা। যা মোট ইস্যু করা মুদ্রার ১৫.৮০ শতাংশ। যা স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় ২ থেকে ৩ শতাংশ বেশি। বাকি ১৪ কোটি ৬৬ লাখ টাকা ছাপানো নোট আকারে বাজারে নেই। এগুলো আছে ইলেকট্রনিক বা প্লাস্টিক মানি আকারে। যেগুলো বিভিন্ন ধরনের কার্ড, অনলাইন বা ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেন হচ্ছে।
২০২২ সালের জুলাই-নভেম্বরে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ছাপানো নোট বাজারে এসেছে ১৮ হাজার ৪১৭ কোটি টাকা। এর আগের বছরের একই সময়ে এসেছিল ১২৯ কোটি টাকা। আলোচ্য সময়ে ছাপানো নোটের প্রবাহ ১৪৩ গুণ বেড়েছে। ২০২২ সালের জুলাই-ডিসেম্বরে তা বেড়ে ১৯ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। ২০২১ সালের একই সময়ে বেড়েছিল ৫৬০০ কোটি টাকা। আলোচ্য সময়ে বেড়েছে সাড়ে ৩ গুণ। ২০২০ সালের একই সময়ে বাজারে ছাপানো টাকা ছাড়ার পরিবর্তে ৫০২৪ কোটি টাকা তুলে নেওয়া হয়।
চলতি অর্থবছরে জিডিপি আকার ৪৪ লাখ কোটি টাকা। মোট জিডিপির মধ্যে বাজারে নোট আকারে ছাড়া হয়েছে ৭ শতাংশ। উন্নত দেশগুলোতে বা ক্যাশবিহীন লেনদেন বেশি এমন দেশে জিডিপির ৩ থেকে ৪ শতাংশ নোট আকারে ছাড়া হয়। অনুন্নত দেশগুলোতে বা ক্যাশ লেনদেন বেশি এমন দেশে নগদ টাকার প্রবাহ বেশি হয়। যেমনটি হয়েছে বাংলাদেশে। ভারতে জিডিপির অনুপাতে নোটের প্রবাহ বাংলাদেশের চেয়ে বেশি। কেননা ভারতে ক্যাশ লেনদেন বেশি। ইউরোপ ও আমেরিকার দেশগুলোতে নগদ লেনদেন কম বলে ছাপানো নোটও কম। ওইসব দেশে কার্ডে লেনদেন বেশি হচ্ছে।