সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা ডা. মুরাদ হাসানের ক্ষমা পাওয়ার খবরটি অনেককে বিস্মিত করেছে। ২৭ জানুয়ারির পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে যাঁদেরকে ইতোপূর্বে দল থেকে বহিস্কার করা হয়েছিল, তাঁদের মধ্যে যাঁরা আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চেয়েছেন তাঁদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছে আওয়ামী লীগ। সে তালিকায় ২০২১ সালের ডিসেম্বরে মন্ত্রিসভা থেকে বরখাস্ত এবং দল থেকে বহিস্কার হওয়া সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানের নামও রয়েছে।
এই ক্ষমা করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর দলের জাতীয় কমিটির সভায়। ওই সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতেই ২২ ডিসেম্বর দলের সভাপতি শেখ হাসিনার কাছে চিঠি দিয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করে ডা. মুরাদ হাসান দলীয় ক্ষমা পেয়ে গেছেন।
২০২১ সালে কতিপয় অশালীন বক্তব্য-মন্তব্যের কারণে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন এ আওয়ামী লীগ নেতা। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নাতনি জাইমাকে নিয়ে একটি ফেসবুক পেজে তাঁর কুরুচিপূর্ণ ও আপত্তিকর মন্তব্যে সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এর রেশ না কাটতেই দেশের এক চিত্রনায়িকার সঙ্গে তাঁর অশ্নীল কথোপকথনের অডিও ভাইরাল হয়। ফাঁস হওয়া কথোপকথনে মুরাদ হাসান ওই নায়িকাকে ধর্ষণের হুমকি দেন; তাঁকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় তুলে আনারও হুমকি দিয়েছিলেন। এতে সমাজের সর্বস্তর থেকে মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে নিন্দা ও প্রতিবাদের ঝড় ওঠে এবং সরকারের ভাব-মর্যাদা প্রশ্নের মুখে পড়ে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের মাধ্যমে মুরাদকে পদত্যাগের নির্দেশ দিলে তিনি মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেন। এরপর তাঁকে দলের সর্বস্তর থেকে বহিস্কার করা হয়। সেই থেকে প্রায় এক বছর তিনি লোকচক্ষুর অন্তরালেই ছিলেন। তবে তাঁর সংসদ সদস্যপদ বহাল আছে।
রাজনৈতিক দলে বহিস্কার কোনো অভিনব ঘটনা নয়। নানা কারণে এ ঘটনা ঘটতে পারে। সেসব কারণের মধ্যে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ কিংবা দলের স্বার্থবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকা অন্যতম। প্রতিটি দলের গঠনতন্ত্রে পরিস্কার লেখা থাকে- দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ, দলের স্বার্থ হানিকর কর্মকাণ্ড কিংবা রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকা অথবা নৈতিক স্খলনজনিত অপরাধে নেতাকর্মীকে দল থেকে বহিস্কারের ক্ষমতা দল সংরক্ষণ করে। তবে এ বহিস্কারের রীতি-পদ্ধতি একেক দলে একেক রকম। নেতাকর্মীকে গঠনতন্ত্রের সেসব ধারা মেনে চলতে হয়। দলীয় শৃঙ্খলা রক্ষার খাতিরেই গঠনতন্ত্রে উল্লিখিত নীতিমালা কঠোরভাবে প্রতিপালনের একটি বিধান সব দলেই মোটামুটি অনুসরণ করা হয়।