মঙ্গলবার শক্তিশালী ভূমিকম্পে ভেঙে পড়া ভবনগুলির ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে থাকা জীবিতদের খুঁজে বের করার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন তুরস্ক এবং সিরিয়ায় উদ্ধারকারী দল। সোমবার এই অঞ্চলে আঘাত হানা ভূমিকম্পে এ পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা সাত হাজার দুশ’ ছাড়িয়ে গেছে।
ভূমিকম্পের পরের রাতে ওই অঞ্চলের তাপমাত্রা হিমাঙ্কের কাছাকাছি নেমে আসে। ৭.৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পের একদিন পর, আরও বেশ কয়েকবার আফটারশক বা অনুকম্প অর্থাত্ প্রচণ্ড কাঁপুনি অনুভব করেছে দুই দেশের সীমান্ত বরাবর অঞ্চলের বাসিন্দারা। যেগুলোর মধ্যে ২০ টিরও বেশি ৪.০ মাত্রার কিংবা তার চেয়েও বেশি ছিল বলে পরিমাপ করা হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম ঘেব্রেইসাস তুরস্ক ও সিরিয়ার জনগণের জন্য "অবর্ণনীয় শোকের এই মুহুর্তে" তাঁর সমর্থন ব্যক্ত করে বলেছেন, সংস্থাটি চিকিত্সা সরবরাহসহ উভয় দেশে চার্টার ফ্লাইট (ভাড়া করা বিমান) পাঠাচ্ছে এবং তারা ভূমিকম্পের আঘাত হানা অঞ্চলে পুনরুদ্ধার এবং পুনর্নির্মাণের সাথে সাথে স্থানীয় জনগণের সাহায্যের জন্যও কাজ করবে।
জেনেভায় ডাব্লিউএইচও’র একটি সভায় টেড্রোস বলেন, "এটি এমন একটি মুহূর্ত যখন আমাদের অবশ্যই সংহতিতে একত্রিত হতে হবে, এক মানবতা হিসাবে, জীবন বাঁচাতে লোকদের কষ্ট লাঘব করতে হবে, যারা ইতোমধ্যে অনেক কষ্ট পেয়েছে।"
তিনি বলেন, এই মুহূর্তে যা যা প্রয়োজন, আমরা ঠিক তাই করব।
তুরস্কের জরুরি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা বলেছে, ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় সরবরাহ অব্যাহত রাখতে তাদের কর্মী বাহিনী সড়ক ও আকাশপথে অভিযান পরিচালনা করছে। এই উদ্ধারকাজে তাদের সাথে ক্রমবর্ধমান সংখ্যক অন্যান্য সরকার এবং সাহায্য সংস্থাগুলিও ওই অঞ্চলে তাদের দল এবং প্রয়োজনীয় সাহায্য-সরঞ্জাম পাঠিয়েছে।
সোমবারের ভোরের ওই ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল গাজিয়েন্টেপের কাছে, তুরস্ক-সিরিয়া সীমান্তের কাছাকাছি।এরপর বিকেলের আগেই প্রায় ১০০ কিলোমিটার উত্তরে ৭.৫ মাত্রার পৃথক একটি ভূমিকম্প আঘাত হানে।
তুরস্কের কর্মকর্তারা মঙ্গলবার জানান, ভূমিকম্পে ৫,৪০০ জনেরও বেশি নিহত এবং ১৫,০০০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। তারা বলেছেন, এ পর্যন্ত ৭,৮০০ এরও বেশি লোককে উদ্ধার করা হয়েছে এবং কমপক্ষে ৬,২০০টি ভবন ধসে পড়েছে। সিরিয়া জানিয়েছে, দামেস্ক সরকার ও উদ্ধারকারী গোষ্ঠীর পরিসংখ্যান অনুসারে, সিরিয়ায় কমপক্ষে ১,৮০০ জন মারা গেছে এবং আহত হয়েছে প্রায় ৩,৫০০ জন।