অনানুষ্ঠানিক আয়োজনে যেকোনো জাতির সাংস্কৃতিক বিকাশ নিষ্পত্তি হয়। অর্থাৎ অলিখিত নিয়ম যা সামাজিক আচরণকে নিয়ন্ত্রণ করার মধ্য দিয়ে সংস্কৃতির বিকাশকে সমৃদ্ধ করতে ঘর থেকে রাষ্ট্রকে দায়িত্ব নিতে হয়। অতি অবশ্যই ভাষা, উৎসব, আচার ও অনুষ্ঠান, ছুটির দিন, বিনোদন, খাদ্য ও স্থাপত্য নিজস্ব সংস্কৃতির প্রধান দিকসমূহ।
ভাষার ওপর নিজেদের কৃষ্টি দাঁড়িয়ে থাকার শক্ত ভিত্তি তৈরি হয়। সঙ্গত প্রাসঙ্গিকতায় একুশে ফেব্রুয়ারি আমাদের জাতিগত জীবনের অন্যতম ঐতিহাসিকতার পথ, যে প্রশস্ত পথের পথিক হয়ে আমরা সাংস্কৃতিক বিকাশের ধারাবাহিকতা রক্ষা করে এগিয়েও যাচ্ছি।
ফেব্রুয়ারি! বাঙালি জাতির আবেগ, উচ্ছ্বাস, কান্না ও আনন্দ নিয়ে ফিরে। অমর একুশের ওপর নির্ভর করে লেখকশ্রেণি বইমেলার মতো পরিপাটি বন্দোবস্তকে স্বাগত জানিয়ে একদিকে যেমন বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করে, অন্যদিকে ফলত নিজেদের সংস্কৃতির বিকাশকে আলিঙ্গন করে বুঝিয়ে দিতে চায় যে, আমরা মাতৃভাষার জন্য রক্ত দিয়েছি, পুনরায় দিতে পারি।
বাংলার মাটি, বাংলার সঙ্গীত ও অসাম্প্রদায়িক মূল্যবোধের ওপর ভর করেই ১৯৭১ সালে মুক্তি সংগ্রামেও ঝাঁপিয়ে পড়ার ঐতিহাসিকতা রয়েছে আমাদের। স্বাধীনতা সংগ্রামের বীজ বপন হয় ওই ১৯৫২ সালেই। ফেব্রুয়ারি এলেই তাই আমরা অদম্য হয়ে যাওয়ার সত্তায় বিভোর থেকে নিজেদের সংস্কৃতিকর্মী হিসেবেও তুলে ধরতে চাই। তেমন দৃষ্টান্ত এই পৃথিবীতেই বিরল।