বাণিজ্যের আড়ালে অর্থ পাচারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখন ঝুঁকিপূর্ণ দেশ। উচ্চ হারে (২৫%–৪৫%) করপোরেট কর আরোপ ও সুশাসনের অভাব—এই দুটি বিষয়ই মূলত দেশ থেকে বিদেশে অর্থ পাচার উসকে দিচ্ছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) শুল্ক বিভাগের তৈরি ট্রান্সফার প্রাইসিং–সংক্রান্ত এক প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। সম্প্রতি প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার গবেষণাকে উদ্ধৃত করে বাণিজ্যের আড়ালে মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে বাংলাদেশ থেকে কি পরিমাণ অর্থ পাচার করা হয়েছে—এর চিত্র তুলে ধরা হয়। বলা হয়, এর ফলে বিপুল পরিমাণ শুল্ক-কর ও পুঁজি পাচার হয়ে যাচ্ছে।
দেশ থেকে অর্থ পাচারের বিষয়টি বর্তমানে ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। বাণিজ্যের আড়ালে অর্থ পাচারের পাশাপাশি হুন্ডির মাধ্যমেও বিদেশে অর্থ চলে যাচ্ছে। অভিযোগ আছে, দেশের একশ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ী, শিল্পপতি, রাজনীতিবিদ, আমলাসহ প্রভাবশালীরা দেশ থেকে অর্থ পাচার করে বিদেশে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খুলেছেন। এ ছাড়া দুবাই, কানাডা, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে বিলাসবহুল ফ্ল্যাট ও বাড়ি কেনার খবরও জানা যায়।
শুল্ক বিভাগের প্রতিবেদনে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) হিসাব তুলে ধরে বলা হয়, ১৯৯০ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত ১৮ বছরে বাংলাদেশ থেকে মোট ৩ হাজার ৪৮০ কোটি ডলার পাচার হয়েছে। অর্থাৎ প্রতিবছর গড়ে ১৮০ কোটি ডলার বিদেশে চলে গেছে, যা বর্তমান বাজারদরে ১৮ হাজার কোটি টাকার বেশি (প্রতি ডলার ১০০ টাকা ধরে)। স্বল্পোন্নত দেশগুলোর (এলডিসি) মধ্যে বাংলাদেশ থেকেই সবচেয়ে বেশি অর্থ পাচার হয়েছে।