জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর 'অসমাপ্ত আত্মজীবনী'তে লিখেছেন বাংলা ভাষায় 'পরশ্রীকাতর' বলে একট শব্দ আছে, যা অন্য কোনো ভাষায় নেই। পরের শ্রী দেখে অন্যের কাতর হওয়া। এই গুণের একক কৃতিত্বের দাবিদার একমাত্র বাঙালির অন্য কারও নয়। ঠিক একই কথা খাটে 'নিজের পায়ে কুড়াল মারা' প্রবাদের ক্ষেত্রে। এই সংস্কৃতিরও দাবিদারদের মধ্যে বাঙালি একদম শীর্ষে।
খুব বেশি দূর যেতে হবে না। ১৯৭১ সালে গোটা বাঙালি জাতি যখন পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সঙ্গে মরণপণ যুদ্ধ করছে, ঠিক তখন গুটিকয়েক বাঙালি প্রবীণ রাজনীতিবিদ শাহ আজিজের নেতৃত্বে জাতিসংঘে গেলেন পাকিস্তানের পক্ষে বাংলাদেশে গণহত্যার পক্ষে সাফাই গাওয়ার জন্য। আজকের প্রজন্মের কাছে অবিশ্বাস্য মনে হতে পারে- এই শাহ আজিজকেই বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জেনারেল জিয়াউর রহমান ৩০ লাখ শহীদের প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বানিয়েছিলেন। ঘটনা সেখানেই থেমে থাকেনি। বেছে বেছে স্বাধীনতাবিরোধীদের মন্ত্রিসভায় ঠাঁই দিয়েছিলেন। জামায়াতসহ অন্যান্য স্বাধীনতাবিরোধী দলকে স্বাধীন বাংলাদেশে রাজনীতি করার দ্বার খুলে দিয়েছিলেন। নিজ স্বার্থের জন্য তিনি ৩০ লাখ শহীদের রক্তে লিখিত দেশের সংবিধানকেও একাধিকবার পরিবর্তন করেছিলেন। জিয়ার এসব 'নিজের পায়ে কুড়াল মারা' কর্মকাণ্ডের ফল দেশ এখনও ভোগ করছে।