পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের আর্থিক উপদেষ্টা ও প্রধান হিসাব কর্মকর্তার (এফএ অ্যান্ড সিএও) বিরুদ্ধে শতাধিক টেন্ডার ফাইল আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে। ইজিপি টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষে ভেটিং বা আর্থিক সম্মতির প্রয়োজন হয় প্রধান হিসাব কর্মকর্তার। কিন্তু কোনো ঠিকাদার দেখা করে সমঝোতা না করলে তিনি কোনো ফাইল ছাড়ছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পশ্চিমাঞ্চল রেলের একাধিক কর্মকর্তাও ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। এর ফলে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের বিভিন্ন প্রকল্পের কোটি কোটি টাকার উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজ আটকে আছে। এতে নির্ধারিত অর্থবছরের মধ্যে কাজগুলো সম্পন্ন না হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। অভিযোগকারীরা বলছেন, এফএ অ্যান্ড সিএও অফিসে তাদের হয়রানি করা হচ্ছে। পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের বিভিন্ন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান, ই-জিপি টেন্ডার সূক্ষ্মভাবে ও বিধিবদ্ধ পদ্ধতিতে মূল্যায়ন হয়। এই মূল্যায়ন প্রক্রিয়ায় কেন্দ্রীয় ক্রয় প্রক্রিয়াকরণ কারিগরি ইউনিট (সিপিটিইউ) ছাড়াও রেলওয়ের নির্ধারিত টেন্ডার কমিটির মূল্যায়নের পর ঠিকাদার নির্বাচন করা হয়। এক্ষেত্রে কোনো ধরনের কারসাজির আশঙ্কাও থাকে না।
এদিকে পশ্চিমাঞ্চল রেলের প্রধান হিসাব কর্মকর্তা একাধারে আর্থিক উপদেষ্টা ও স্থানীয় টেন্ডার কমিটির সদস্য। টেন্ডার প্রক্রিয়ার শেষ পর্যায়ে তার ভেটিং বা সম্মতির প্রয়োজন হয়। একইভাবে পশ্চিমাঞ্চল রেলের দুই রেল বিভাগ পাকশী ও লালমনিরহাটে অতিরিক্ত প্রধান হিসাব কর্মকর্তা ও আর্থিক উপদেষ্টা পর্যায়ক্রমে বিভাগীয় পর্যায়ের টেন্ডার কমিটির সদস্য। কারিগরি মূল্যায়ন শেষে স্থানীয় টেন্ডার কমিটির সদস্যরা মন্তব্যসহ পর্যায়ক্রমে মতামতসহ অনুমোদনের জন্য পরবর্তী ধাপ প্রধান হিসাব কর্মকর্তার কাছে পাঠান। প্রক্রিয়া শেষে ঠিকাদারকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়ে থাকে।
সংশ্লিষ্টদের সূত্রে জানা যায়, ইতোমধ্যে ভেটিং বা আর্থিক সম্মতির জন্য পশ্চিম রেলের বিভিন্ন বিভাগের বেশকিছু প্রকল্পের টেন্ডার প্রধান হিসাব কর্মকর্তা ও আর্থিক উপদেষ্টার দপ্তরে পড়ে আছে অনেকদিন ধরে। সংশ্লিষ্ট টেন্ডার কমিটির প্রধানরা ভেটিং দিয়ে দ্রুত ফাইল ছেড়ে দেওয়ার তাগিদ দিলেও প্রধান হিসাব কর্মকর্তা তা ছাড়ছেন না। একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক নাম প্রকাশ না করে বলেন, ভেটিংয়ের নামে ঠিকাদারদের জিম্মি করে ফেলেছেন প্রধান হিসাব কর্মকর্তা। তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সমঝোতায় না এলে কোনো ফাইল তিনি ছাড়ছেন না। এর ফলে রেলের উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজ শুরু করতে যেমন বিলম্ব হচ্ছে, তেমনই নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না হওয়ার আশঙ্কা থাকছে। এজন্য ঠিকাদারসহ রেল কর্মকর্তাদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।