সাধারণ মানুষ বাস্তবতার নিগড়ে বন্দি। তাই তাদের পক্ষে বাস্তবতাকে অতিক্রম করে চিন্তামুক্ত থাকার কোনো জো নেই। যারা তথাকথিত অসাধারণ-উচ্চবিত্ত, তাদের ক্ষেত্রে চিন্তা করার কোনো কারণ নেই। সব অসম্ভবই তাদের পক্ষে সম্ভব। বৈশ্বিক এই মহাবিপর্যয়ের সন্ধিক্ষণে জনসাধারণের জীবনযাত্রায় দুর্দশার অন্ত নেই। সেখানে একশ্রেণির মানুষের ভোগ-বিলাসের যাবতীয় রসদের কোনো কিছুরই কমতি নেই। শুধু দেশেই নয়, সম্পদের পাহাড় গড়ছে বিদেশেও। মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, কানাডা কিংবা দুবাইয়ে অর্থপাচারের টাকায় চলছে সেকেন্ড হোম করার যথারীতি উৎসব। নীতি-নৈতিকতাবিবর্জিত অসাধারণ এসব মানুষ ঘুষ, দুর্নীতি, বাটপাড়ি, চুরির টাকায় স্ত্রী-পরিজন নিয়ে বেশ আরামে দিনাতিপাত করছে। আর পিৎজা, বার্গার, স্টেক সাবাড় করছে। ভোগ-বিলাসে ব্যস্ত সময় পার করছে। প্রায় দুই বছর ধরে মানুষের ওপর সবচেয়ে বড় আঘাত নিত্যপণ্য ও জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি।
এর পর রয়েছে রোগ-শোক। চিকিৎসাহীনতায় ভুগছে বহু মানুষ। আর প্রাকৃতিক দুর্যোগ সঙ্গে নিয়েই প্রান্তিক মানুষের বসবাস। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির মাসিক জরিপ অনুযায়ী গত সেপ্টেম্বর মাসে ৬৮ শতাংশ মানুষ খাবার কিনতে হিমশিম খায়। আগস্ট মাসের তথ্য বলছে, ওই মাসের খাবার কিনতে ঋণ নিয়েছে ৬৪ শতাংশ মানুষ। টিসিবির পরিবেশকের দোকান বা ওএমএসের ট্রাক থেকে পণ্য কেনার জন্য সারিতে আজকাল নতুন নতুন মানুষ দেখা যাচ্ছে। পোশাক-পরিচ্ছদ বা চলন-বলনে তাদের অনেকটা অসহায় মধ্যবিত্ত ধাঁচের মনে হচ্ছে। মধ্যবিত্তের জীবনে স্বাচ্ছন্দ্য নেই, নিম্নবিত্ত মহাসংকটে আর দরিদ্রের পেট ভরানোই দায় হয়ে পড়ছে।