১৯৭৯ সালের ১১ আগস্ট গুজরাটের সৌরাষ্ট্রের মোরবি শহর। মাটির নানা রকমের পাত্র, দেয়ালঘড়ি—এসব পণ্য উৎপাদনকারী একটি শহর বলে বিশেষভাবে পরিচিত। এখানে মাচ্ছু নদী আছে। সেই নদীসংলগ্ন বাঁধ আছে। সেই সময় এই মোরবি শহরে ব্যাপক বন্যা হয়। সেই বন্যায় ২৫ হাজার মানুষ মারা যায় এবং গোটা শহরটাই জলের নিচে চলে যায়। পরে অভিযোগ ওঠে যে এই বিপর্যয়টা মানুষেরই তৈরি, সরকার কেন বাঁধজনিত বাড়তি সমস্যাগুলোতে সঠিক সময়ে নজর দেয়নি।
সেই সময় সেচমন্ত্রী ছিলেন কেশুভাই প্যাটেল, যিনি পরবর্তীকালে গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী হন। তিনি আরএসএসের একজন প্রবীণ নেতা। সেই সময় জনতা পার্টির সরকার, যেটি বাবুভাই যশভাই প্যাটেলের নেতৃত্বে তৈরি হয়েছিল, তার সদস্য। এই বাবুভাই যশভাইয়ের পার্টি, দিল্লিতে এটাই তৈরি হয়েছিল ভারতীয় জনসংঘ, যেটা পরবর্তীকালে জনতা পার্টির সঙ্গে মিশে যায়। কেশুভাই এই ঘটনা শুনে আতঙ্কিত হন এবং ঘটনাস্থলে দৌড়ে যান। কিন্তু মানুষের সমস্যা তখন সাংঘাতিক। তাই প্রয়োজন ছিল ত্রাণ সাহায্য। এই সময় গুজরাটের ত্রাণের কাজে অবতীর্ণ হন আরএসএসের এক যুবক প্রচারক। আরএসএসের প্রচারক মানে, যিনি ফুল টাইমার। ব্যক্তির নাম নরেন্দ্র দামোদর দাস মোদি। যখন গুজরাট শহরে বাঁধটা ভাঙে তখন মোদি চেন্নাই শহরে নানাজি দেশমুখের সঙ্গে ছিলেন।
নানাজি দেশমুখ আরএসএসের আরেক প্রবীণ নেতা, যিনি দীন দয়াল রিসার্চ ইনস্টিটিউট নামের একটি স্বয়ংশাসিত সংস্থার কর্ণধার। এই সংস্থাটি আরএসএসের সঙ্গে যুক্ত। নরেন্দ্র মোদি সেই সংস্থায় নানাজি দেশমুখের সঙ্গেই ছিলেন কাজ নিয়ে ব্যস্ত। গুজরাটের এই ঘটনা শুনে মোদি দৌড়ে চলে আসেন গুজরাটে এবং সেখানে মানুষের সেবায় নিযুক্ত হন। অতি অল্প সময়ের মধ্যে মোদির নেতৃত্বে আরএসএসের স্বেচ্ছাসেবীরা সেখানকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসেন। গুজরাটের ইতিহাসে তথা আরএসএসের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ইতিহাসেও এটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ও স্মরণীয় ঘটনা। এখানকার যে এলাকাগুলোতে নরেন্দ্র মোদি কাজ করেছিলেন, সেখানে মুসলিম অধ্যুষিত এলাকাও বিপুলভাবে ছিল।