চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শহীদ আবদুর রব হলের ডাইনিংয়ে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ৭০০ জনের খাবার রান্না করা হয়। খাবারের তালিকায় ছিল সবজি, ডাল, মাছ ও মুরগি। তরকারি রান্না করতে সব মিলিয়ে দেওয়া হয়েছে ২৫০ গ্রাম পেঁয়াজ। আর ডাল রান্না করা হয়েছে মাত্র ১ কেজি। সেটাই খাবে ৭০০ জনে। গামলাভরা পানিতে হলুদ আর তেলের পাতলা স্তর দেখে বোঝার উপায় নেই, তা ডাল নাকি থালা-বাটি ধোয়া পানি।
ডাইনিংয়ে খাচ্ছিলেন আরবি বিভাগের ছাত্র জাহিদ ফরিদ। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘হলে যেদিন প্রথম খেতে এলাম, সেদিন ডালের পানিতে হাত ধুয়ে ফেলেছি। ডালের পানি আর ময়লার পানি দেখে পার্থক্য করার কোনো উপায় নেই। অনেক সময় ময়লার পানিকেও তবু একটু ঘন মনে হয়।’
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, শুধু ডাল নয়, হল ডাইনিংয়ের অন্য খাবারের অবস্থাও করুণ। এক কেজি মুরগিতে করা হয় ২৫ থেকে ২৮ টুকরো। যার টুকরো ২০ থেকে ২৫ গ্রাম। মাছের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। তরকারির স্বাদ এমন যে ক্ষুধা নিবারণের জন্য কোনোরকম মুখে দিয়ে গিলে ফেলতে হয়।
বিভিন্ন হলের ডাইনিং পরিচালক ও কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এক কেজি ওজনের একটি মুরগি কাটা-ছেঁড়ার পর পাওয়া যায় ৭০০ গ্রামের কাছাকাছি মাংস। এটাকে ২৫ থেকে ২৮ টুকরো করা হয়। একজন শিক্ষার্থীর জন্য এক টুকরো। মুরগির বিকল্প হিসেবে একই পরিমাপের মাছও রান্না করা হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক সাঈদুল আরেফিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, একজন বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া শিক্ষার্থীর জন্য এই মানের খাবার যথেষ্ট নয়। এতে শিক্ষার্থীদের আমিষের ঘাটতি থেকে যায়।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেদের জন্য সাতটি ও মেয়েদের জন্য চারটি আবাসিক হল রয়েছে। এতে আসন আছে ৪ হাজার ৯২৫টি। যদিও আসনের চেয়ে আরও বেশি শিক্ষার্থী হলে অবস্থান করে। তবে সব হলের ডাইনিংয়ের চিত্র মোটামুটি একই।