আমার শহর ঢাকা। এ শহরেই আমার বেড়ে ওঠা। শৈশব-কৈশোর-তারুণ্য থেকে বর্তমান এ শহরেই আমার যাপন। আজকের ঢাকার মতো ছিল না আমার বেড়ে ওঠার সময়ের ঢাকা। এ ছিল অন্য রকম এক সৌন্দর্যের শহর। এই শহর মানুষকে প্রাণ দিত, উচ্ছলতা দিত। দূর শহর থেকে কিংবা গ্রাম থেকে আসা মানুষ এ শহরের আলো-বাতাসে চঞ্চল হয়ে উঠত। প্রত্যেকের মধ্যে ছিল প্রাণের ঝঙ্কার। ক্রমেই বাড়তে থাকল শহরে মানুষের সংখ্যা। আর মানুষ দূরে সরে যেতে থাকল একে অন্যের থেকে। বর্তমানে ঢাকা মহানগরীর জনসংখ্যা ২ কোটির ওপরে। ২ কোটি মানুষ ঢাকা শহরটিকে পরিণত করেছে বর্জ্যরে নগরীতে। যে যেখানে পারছে ময়লা-আবর্জনা ফেলছে। আবর্জনা যে একটা নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলতে হয়, সেটিই অধিকাংশের শিক্ষার মধ্যে নেই। রাস্তাঘাট, পার্ক, খোলা জায়গা হয়ে উঠেছে ডাস্টবিন।
২০১৬ সালে ঢাকা সিটি করপোরেশন প্রায় ১১ হাজার মিনিডাস্টবিন বসিয়েছিল রাস্তার পাশে। আমি ভেবেছিলাম- যাক, এবার নিশ্চয়ই রাস্তাঘাটের চিত্র বদলাবে। কিন্তু আমার সে চিন্তা ছিল ভুল। বছর দুয়েকের মধ্যেই মিনিডাস্টবিনগুলোকে আমরা নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছি। একটা অনভ্যস্ত জাতিকে অভ্যস্ত করা খুব কঠিন বিষয়। সেটি শুরু করতে হবে পরিবার ও স্কুল থেকে। আমি চীনে দেখেছি এয়ারপোর্ট থেকে শুরু করে হোটেল ও বাসাবাড়িতে দুই ধরনের ডাস্টবিন থাকে। একটায় ফেলা হয় জৈববর্জ্য আর অন্যটায় অজৈব। জৈববর্জ্য ব্যবহার করা হয় সার ও বিদ্যুৎ উৎপাদনে। আর অজৈব বর্জ্য বাছাই করে প্রক্রিয়াজাতের মাধ্যমে শিল্পের কাঁচামালে রূপান্তর করা হয়। অবশ্য ঢাকা সিটি করপোরেশন ও কয়েকটি এনজিওকে এই ধরনের উদ্যোগ নিতে দেখেছিলাম।