দেশের রাজনীতিসচেতন মানুষের দৃষ্টি এখন আওয়ামী লীগের সম্মেলনের দিকে। ক্ষমতাসীন এই দলের ২২তম জাতীয় সম্মেলন আগামী ২৪ ডিসেম্বর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত হবে। ৪ নভেম্বর গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বৈঠকে সম্মেলনের এই তারিখ চূড়ান্ত করা হয়। দুই দিনব্যাপী সম্মেলন করার রেওয়াজ থাকলেও এবার জাতীয়-আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক সংকটের কারণে খরচ কমাতে এবং সমালোচনা এড়াতে এক দিনেই শেষ করা হবে। সম্মেলনে কোনো ধরনের জাঁকজমক হবে না। তবে সম্মেলন সফল করতে ১১টি উপকমিটি গঠনের মাধ্যমে সাংগঠনিক তৎপরতা শুরু করেছে দলটি। কাউন্সিলর ও ডেলিগেট তালিকা তৈরি করতে চিঠি পাঠানো হয়েছে জেলাগুলোতে। গঠনতন্ত্র মেনে জনসংখ্যার হার অনুযায়ী কাউন্সিলর ও ডেলিগেটের তালিকা করে আওয়ামী লীগ।
জেলার প্রতি ২৫ হাজার জনসংখ্যার জন্য একজন করে কাউন্সিলর এবং এর দ্বিগুণ ডেলিগেট হবেন। এবার সম্মেলনে ৮ হাজার কাউন্সিলর ও ১৬ হাজার ডেলিগেট থাকবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এ ছাড়া যথেষ্টসংখ্যক ‘সম্মানিত অতিথি’ উপস্থিত থাকবেন।
সম্মেলনের প্রস্তুতি হিসেবে জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে সম্মেলন করছে আওয়ামী লীগ। দলের ৭৮টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে সম্মেলন হয়েছে ৪৪টির। এর মধ্যে অনেক জেলায় পূর্ণাঙ্গ কমিটিও হয়েছে। জাতীয় সম্মেলনের আগে সব সাংগঠনিক জেলাসহ সহযোগী সংগঠনের মধ্যে মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ, তাঁতী লীগ এবং ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগের সম্মেলন করারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী রাজনৈতিক দল। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম এই রাজনৈতিক দলটির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে বলেই এই দলকে নিয়ে ভিন্ন ধরনের আবেগ কাজ করে অনেকের মধ্যে। এটা বলা হয়ে থাকে যে বাংলাদেশের ইতিহাসের সঙ্গে আওয়ামী লীগের ইতিহাসও একীভূত হয়ে আছে। তবে বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ এবং শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ এক কি না, সে প্রশ্ন যেমন আছে, তেমনি এটাও অনেকের জিজ্ঞাসা যে স্বাধীনতার ৫০ বছর পেরিয়ে এসেও আমাদের দেশে আওয়ামী লীগের বিকল্প মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে বিশ্বাসী একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল কেন গড়ে উঠল না? কেন রাজনীতিটা আওয়ামী লীগ ও বিএনপি বলয়ে ঘুরপাক খাচ্ছে?