ব্যবসায়ীদের ঋণ খেলাপি হওয়া অস্বাভাবিক কোনো ঘটনা নয়। তবে যেটা অস্বাভাবিক, সেটা হচ্ছে যদি ব্যাংকিং ব্যবসায় খেলাপি ঋণের একটা সংস্কৃতি সৃষ্টি হয়। ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপি প্রচুর আছে আর আছে এমন অনেক ব্যবসায়ী যারা ধরেই নিয়েছে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণ পরিশোধ না করলে কিছু হয় না।
সাধারণ সময়ে কিছু ব্যবসায়ী ঋণ খেলাপি হলেও, বাকিরা কিন্তু ঠিক সময়ে নিয়মমাফিক তাদের ঋণ পরিশোধ করেন। যার ফলে, ঋণ খেলাপিদের জন্য ব্যাংকগুলোর যে আর্থিক ক্ষতি হয়, সেটা পূরণ হয়ে যায় অন্য ব্যবসায়ীদের ঋণ পরিশোধ করার ফলে। কিন্তু বহু ব্যবসায়ী এক সঙ্গে ঋণ খেলাপি হয়ে উঠলে তার ক্ষতিপূরণ কঠিন হয়ে পড়ে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন বলছে, ব্যাংক খাতে এক বছরে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৩৩ হাজার কোটি টাকা। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর শেষে খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৩৪ হাজার ৩৯৬ কোটি টাকা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য বলছে, সেপ্টেম্বর মাস শেষে ব্যাংক খাতের মোট ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৪ লাখ ৩৬ হাজার কোটি টাকার কিছু বেশি।
খেলাপিতে পরিণত হয়েছে মোট ঋণের ৯ দশমিক ৩৬ শতাংশ। কী ভয়ংকর চিত্র! আমাদের গোটা ব্যাংকিং ব্যবস্থা, যা এমনিতেই অনুৎপাদক সম্পদের সমস্যায় জর্জরিত, তার নাজুক অবস্থা বোঝা যায় এই বিপুল খেলাপি ঋণের পরিমাণ দেখে। ব্যাংকগুলোর ঋণ দান সক্ষমতা হয়তো এক সময় কমে যেতে পারে এই কারণে।