ফোর্বসের সাম্প্রতিক এক নিবন্ধ বলছে, লাতিন আমেরিকায় চীনের প্রভাবের তালিকা দীর্ঘ ও প্রভাব বিস্তারকারী। ওয়াশিংটন এখনও বিষয়টিকে সহজ ব্যবস্থাপনায় নিতে পারছে না। এটা বলা দরকার, চীন বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় যোগ দিয়েছে ২১ বছর। এর মধ্যে লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর সঙ্গে চীনের বাণিজ্য বার্ষিক ৩১ শতাংশ হারে; বছরে প্রায় ৪৫০ বিলিয়ন ডলার বাড়ছে। চীন এখন দক্ষিণ আমেরিকার সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার এবং পুরো লাতিন আমেরিকায় যুক্তরাষ্ট্রের পর দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার। চিলি, কোস্টারিকা ও পেরু- এ তিন দেশের সঙ্গে চীনের 'মুক্ত বাণিজ্য' চুক্তি রয়েছে এবং ইকুয়েডরের সঙ্গে গত ফেব্রুয়ারি থেকে এ আলোচনা শুরু হয়েছে। তবে ওই অঞ্চলে এসব ঘটনা ঘটার পরও নিবন্ধনটি বলছে, সেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আধিপত্যে এতটুকু প্রভাব পড়েনি। বস্তুত ২০০ বছর ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার মনরো মতবাদ অনুযায়ী সেখানে একক আধিপত্য বজায় রেখেছে। এটি করতে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্র অন্তহীন যুদ্ধ, ক্যু ও রাজনৈতিক প্রভাব বজায় রেখেছে।
এর পরও ওই অঞ্চলের দেশগুলোতে চীনের বাণিজ্যিক সম্প্রসারণ বন্ধ হয়নি। আমেরিকার আধিপত্য থাকার পরও লাতিন আমেরিকার কোনো দেশে সমৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতা সে অর্থে আসেনি। দেশগুলোতে দারিদ্র্য, বৈষম্য ও বিশৃঙ্খলা লেগেই আছে। লাতিন আমেরিকায় চীনের নির্দিষ্ট কোনো রাজনৈতিক প্রভাব বৃদ্ধির পরিকল্পনা না থাকায় দুই অঞ্চলের মধ্যে ক্রমবর্ধমান সম্পর্ক কয়েক দশক ধরে নতুন উদারতাবাদের ফ্রেমে বন্দি হয়ে আছে। সে কারণেই আমরা দেখছি, সেখানে বাম পন্থার ঢেউ উঠেছে এবং একটার পর একটা দেশে বামপন্থি সরকার নির্বাচিত হচ্ছে। ব্রাজিলের নতুন প্রেসিডেন্ট লুলা ডি সিলভা এর সাম্প্রতিকতম উদাহরণ। তিনি এমন সময় দেশটির নেতৃত্বে এসেছেন, যখন সেখানে চলছে গভীর অর্থনৈতিক সংকট। সন্দেহ নেই, তিনি ব্রিকসের সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে চীনের সঙ্গে তাঁর অংশীদারিত্ব আরও বাড়াবেন।