রাশিয়ার বিপর্যয় সৃষ্টিকারী ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে অনেকে অনেক প্রশ্ন তোলেন। এর মধ্যে একটি অংশের প্রশ্ন হলো, রাশিয়া যেভাবে তার ক্ষুদ্র প্রতিবেশীর কাছে অপমানজনক পরাজয়ের মুখে পড়েছে, তাতে কি রাষ্ট্র হিসেবে রাশিয়ার অস্তিত্ব টিকে থাকবে? আপাতভাবে এই চিন্তা পুরোপুরি উদ্ভট বলে মনে হতে পারে। তিনটি বিষয়ে বড় ধরনের ভুল হিসাব-নিকাশের কারণে ভ্লাদিমির পুতিনের অবস্থান দুর্বল হয়েছে। এগুলো হলো, রাশিয়ার সামরিক সক্ষমতা সম্পর্কে অন্ধ ধারণা, ইউক্রেনীয়রা নিজেরাই রুশ বাহিনীকে স্বাগত জানাবেন ও পশ্চিমাদের ঐক্যে ফাটল ধরেছে।
রাশিয়ার বিভিন্ন শহরে এরই মধ্যে যুদ্ধের প্রতিবাদে, পুতিনের নেতৃত্বের বিরোধিতা করে এবং সেনাবাহিনী নিয়োগের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে বড় বিক্ষোভ হয়েছে। সেনাবাহিনীর তালিকায় নাম উঠবে কি না, এই ভয়ে এরই মধ্যে অনেকে রাশিয়া ছেড়েছেন। পশ্চিমাদের আরোপ করা বিশাল অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার ধাক্কা রাশিয়াতে ভালোভাবেই লেগেছে। কিন্তু মস্কোর দিক থেকে নেওয়া কিছু সৃজনশীল অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার কারণে ধাক্কাটা যতটা গভীর হবে বলে ধারণা করা হয়েছিল, তা হয়নি।
প্রকৃতপক্ষে, ইউক্রেন ডার্টি বোমা হামলা চালাতে পারে, এমন মিথ্যা দাবি তুলে মস্কো এখন গলা ফাটিয়ে পারমাণবিক বোমা ব্যবহারের হুমকি দিচ্ছে। এর মাধ্যমে পুতিন তাঁর শক্তিশালী ভাবমূর্তি প্রতিষ্ঠা করতে চাইছেন। রাশিয়ার মতো কর্তৃত্ববাদী একটি রাষ্ট্র সম্পর্কে যখন পশ্চিমা কোনো ভাষ্যকার যুক্তি তৈরি করেন, তখন তাঁর মধ্যে একটা ধারণাগত পক্ষপাত কাজ করা স্বাভাবিক। কিন্তু কেউই একটা বিষয় গুরুত্বের সঙ্গে ভাবছেন না, ভিয়েতনাম, ইরাক অথবা আফগানিস্তান থেকে লজ্জাজনকভাবে সৈন্য প্রত্যাহারের পর যুক্তরাষ্ট্র ভেঙে পড়েছিল কি না।
এরপরও তিনটি যৌক্তিক কারণ আছে, যাতে ধারণা জন্মে, ইউক্রেনে পরাজিত হলে ক্রেমলিনের রাজনৈতিক দুর্গ চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যেতে পারে। মস্কোর শাসকদের জন্য পুরো রাশিয়ার শাসন চালিয়ে যাওয়া কষ্টসাধ্য হয়ে উঠতে পারে।