দেশে চারু শিল্পের যে কয়টি ধারার শিক্ষা কার্যক্রম চালু রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম গ্রাফিক ডিজাইন। ভিজ্যুয়াল কনটেন্টের দুনিয়ায় আকর্ষণীয়ভাবে তথ্য উপস্থাপনের অন্যতম একটি অনুষঙ্গ এটি। কল্পনা ও সৃজনশীলতার মেলবন্ধনে একটি ডিজাইন তৈরিতে যুক্ত হয়েছে আধুনিক প্রযুক্তি। কম্পিউটার সফটওয়্যারের মাধ্যমে প্রাণবন্ত করে তোলা হচ্ছে তথ্য বা বার্তাকে। আধুনিক সমাজের এমন কোনো অনুষঙ্গ নেই যেখানে গ্রাফিক ডিজাইনারদের ছোঁয়া নেই। এ কারণে প্রযুক্তিনির্ভর বিশ্বে গ্রাফিক ডিজাইনের গ্র্যাজুয়েটদের চাহিদা রয়েছে সর্বত্রই।
গ্রাফিক ডিজাইন মানুষের অস্তিত্ব, ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। যদিও শুরুটা কোনো কম্পিউটার বা অন্য কোনো ডিজিটাল মাধ্যমে হয়নি। প্রাগৈতিহাসিক কালের দক্ষিণ ফ্রান্সের লাসকাক্স গুহা, রোমের ট্রাজান কলাম, কয়েক হাজার বছর পরে মেসোপটেমীয়দের পাথরে খোদাই করা ব্লাউ মনুমেন্ট যেখানে সবার প্রথম শব্দ ও ছবি উভয়ই ব্যবহার করা হয়েছিল। সেগুলো নিছক সাজসজ্জা বা সৌন্দর্যের জন্য করা হয়নি। তারা যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবেই পাথর, গুহার দেয়ালে চিত্র আঁকত। আধুনিক সময়ে যা কাগজ, ক্যানভাস বা কম্পিউটারের পর্দায় করা হচ্ছে। বর্ণমালা, ভাষার উত্পত্তি, সভ্যতা ও প্রযুক্তি বিকাশের পালাবদলে পরিবর্তন এসেছে সেই যোগাযোগ মাধ্যমে। এখন যোগাযোগ মানেই শুধু কথা বলা বা ভাব বিনিময় নয়। ছোট একটি পোস্টার, চিত্র বা নকশা নীরবে বলে যায় অনেক কথা। মানুষের নির্দিষ্ট কোনো কল্পনা যখন শব্দ আর ছবির সমন্বয়ে বাস্তব রূপ পায় এবং সেটি যখন সমাজে যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে তাকেই বলা হচ্ছে গ্রাফিক ডিজাইন। আধুনিক সময়ে যেটাকে ভিজ্যুয়াল কমিউনিকেশনস বা দৃশ্যমান যোগাযোগ ব্যবস্থাও বলা হয়।