ভারতীয় উপমহাদেশে কংগ্রেস ও মুসলিম লীগের দ্বন্দ্ব-সংঘর্ষে উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ১৯৪৬ সালের মে মাসে ব্রিটিশ সরকার এ দুই দলসহ অন্যান্য নেতার সঙ্গে আলোচনার জন্য ভারতে তিন সদস্যবিশিষ্ট কেবিনেট মিশন পাঠায়। কংগ্রেস ও মুসলিম লীগের সঙ্গে বিস্তর আলোচনা সত্ত্বেও ভারত শাসন বিষয়ে কোনো ত্রিপক্ষীয় মতৈক্য না হওয়ায় কেবিনেট মিশন একতরফাভাবে তাদের প্রস্তাব ঘোষণা করে।
এই প্রস্তাব অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্রীয় বা ফেডারেল চরিত্রের একটি ভারতীয় ইউনিয়ন গঠিত হবে, যার হাতে বিদেশ নীতি, দেশ রক্ষা ও যোগাযোগ ব্যবস্থা থাকবে এবং এই বিভাগগুলোর জন্য অর্থ সংগ্রহের ব্যবস্থা থাকবে। এই প্রস্তাবে দেশীয় রাজ্যগুলোসহ ব্রিটিশ ভারতকে এ, বি, সি- এই তিন ভাগে বিভক্ত করার কথা বলা হয়। এক ভাগে থাকবে হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ বোম্বাই, মাদ্রাজ, যুক্ত প্রদেশ (উত্তর প্রদেশ), বিহার, মধ্যপ্রদেশ, উড়িষ্যা এবং দক্ষিণ ভারতের অন্যান্য অঞ্চল। অন্য দুই ভাগের মধ্যে একটি গঠিত হবে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চল পাঞ্জাব, উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশ, সিন্ধু ও বেলুচিস্তান। অন্যটি হবে মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলা এবং আসামকে নিয়ে গঠিত। কিছু শর্তসাপেক্ষে কংগ্রেস ও মুসলিম লীগ উভয়েই প্রস্তাবটি গ্রহণ করে। এ সময় অন্তর্বর্তী সরকার গঠনে কংগ্রেস সম্মত না হলেও কংগ্রেস ও মুসলিম লীগ উভয়েই সংবিধান সভায় যোগ দিতে সম্মত হয়। অবশেষে কংগ্রেস-লীগের দ্বন্দ্বের একটা সমাধান হলো মনে করে সাধারণভাবে ভারতের ব্যাপক জনগণ ভারত শাসন বিষয়ে এ পরিকল্পনাকে সমর্থন করে।