এ বছর শান্তিতে নোবেল পেয়েছেন বেলারুশের মানবাধিকারকর্মী আলেস বিয়ালিয়াৎস্কি, রুশ মানবাধিকার সংগঠন মেমোরিয়াল ও ইউক্রেনের মানবাধিকার সংগঠন সেন্টার ফর সিভিল লিবার্টিস। বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্দার লুকাশেঙ্কোর কট্টর সমালোচক বিয়ালিয়াৎস্কি দ্বিতীয়বারের মতো জেল খাটছেন। অন্যদিকে মানবাধিকার রক্ষায় কাজ করায় মেমোরিয়ালের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় রাশিয়ার সুপ্রিম কোর্ট। লিখেছেন তৃষা বড়ুয়া
রাজনৈতিক বিবেচনা
নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়ার ক্ষেত্রে পশ্চিমাদের বরাবরই ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতিকে গুরুত্ব দিতে দেখা গেছে। এবারও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। গত সপ্তাহে শান্তিতে নোবেলজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়। এরা হলেন বেলারুশের কারাবন্দি মানবাধিকার কর্মী আলেস বিয়ালিয়াৎস্কি, রুশ মানবাধিকার সংগঠন মেমোরিয়াল ও ইউক্রেনের মানবাধিকার সংগঠন সেন্টার ফর সিভিল লিবার্টিস। যারা এ বছর শান্তিতে নোবেল পেলেন, তাদের মধ্যে একটি বিষয়ে মিল রয়েছে। পুরস্কারপ্রাপ্তদের সবাই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে রাশিয়ার বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন এবং আছেন। ইউক্রেনে হামলার অষ্টম মাসে রুশবিরোধীদের নোবেল দিয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনকে নোবেল কমিটি বিশেষ বার্তা দিতে চেয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে। এ কারণে পুতিনের জন্মদিনের দিন অর্থাৎ ৭ অক্টোবরই রাশিয়াবিরোধীদের নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত করার সিদ্ধান্ত নেয় তারা। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ভাষ্য, একটি কর্র্তৃত্ববাদী রাষ্ট্রে লাখ লাখ মানুষ ভয়, আশঙ্কা ও অনিশ্চয়তার মধ্যে বাস করে। তারা মতপ্রকাশ করতে পারে না। চোখের সামনে ব্যাপক আকারে দুর্নীতি-লুটপাট দেখেও তাদের চুপ থাকতে হয়। ক্ষমতার অপব্যবহার দেখে ও ফাঁকা সেøাগান শুনে তারা ক্লান্ত। আশার দিক হলো, এমন দমবন্ধ পরিস্থিতির মধ্যেও হাতেগোনা কিছু মানুষ ও সংগঠন ভয়ভীতি ও রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের তোয়াক্কা না করে লড়াই জারি রাখে। আলেস বিয়ালিয়াৎস্কি, মেমোরিয়াল ও সেন্টার ফর সিভিল লিবার্টিসের মতো অকুতোভয় সত্তার আজকের পৃথিবীতে বিশেষ দরকার।