কক্সবাজারের একটি শীর্ষ মানব পাচারকারী চক্রের নেতৃত্ব রয়েছে জেলা শহরের কৃষক লীগ নেতা একরামুল হক জুয়েল। চক্রটি ২০১২ সাল থেকে এখন পর্যন্ত কয়েক হাজার রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও বাংলাদেশি নাগরিককে মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে পাচার করেছে। এর সঙ্গে বিএনপি নেতা নুরু উদ্দিন, সুমন ও আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে।
গত ১০ বছর ধরে মানব পাচার করে আসলেও চক্রের সদস্যরা ধরাছোঁয়ার বাইরে। যদিও মানব পাচার মামলায় একরামুল হক জুয়েল একাধিকবার জেল খেটেছে। শুধু এই চক্রের সদস্যরা নয় জেলার বিভিন্ন থানায় হওয়া ৬৫০টির বেশি মানব পাচারের মামলার হাজারের বেশি আসামি এখনো পর্যন্ত ধরাছোঁয়ার বাইরে। মানব পাচার আইন অনুযায়ী ৯০ দিনের মধ্যে অভিযোগ গঠন এবং ১৮০ দিনের মধ্যে বিচার শেষ করার কথা থাকলেও দীর্ঘ এ সময় একটি মামলারও বিচার কাজ শেষ হয়নি। বিশ্লেষকরা বলছেন, এর জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উদাসীনতাই দায়ী। যদিও পুলিশ বলছে, এখন থেকে মানব পাচার মামলার সব আসামিকে খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হবে।
টার্গেট রোহিঙ্গারা : প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সাল থেকে কক্সবাজার সমুদ্র উপকূল দিয়ে একের পর এক মানব পাচারের ঘটনা ঘটছে। জেলার ১২০ কিলোমিটার সাগর উপকূল সন্ধ্যার পর অরক্ষিত হয়ে পড়ে। এ সময় বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে মানব পাচারের ঘটনা ঘটলেও প্রতিরোধের ব্যবস্থা নেই। মূলত শীত মৌসুমে সাগর শান্ত থাকার সুযোগে পাচারকারীদের তৎপরতা বেড়ে যায়। তাদের টার্গেটে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ক্যাম্পে থাকা রোহিঙ্গারা। ছেলেদের চাকরি ও মেয়েদের বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে পাচারের চেষ্টা করে দালালরা।
সোমবার মধ্যরাতে শতাধিক রোহিঙ্গা নিয়ে অবৈধভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার পথে টেকনাফে একটি ট্রলারডুবির ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় এখন পর্যন্ত এক শিশু ও পাঁচজন রোহিঙ্গা নারীর লাশ উদ্ধার হয়েছে। এ ছাড়া ৪৫ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। নিখোঁজ আছেন ২৫ জন। এ ঘটনায় ২৪ জনের বিরুদ্ধে টেকনাফ থানায় মামলা হয়েছে। গ্রেফতার হয়েছে ৬ দালাল।
বিজ্ঞাপন