আজ আপনি আমজনতা হিসেবে কোনও দেশকে, কোনও দেশের রাষ্ট্রপ্রধানকে শত্রুগণ্য করতেই পারেন। সেই আপনিই যখন এই দেশের সর্বোচ্চ ক্ষমতায় আসীন হবেন, আপনি চাইলেও সেই ঘৃণা জারি রাখতে পারবেন না।
এই দেশের রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে ওই ঘৃণিত রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে আপনার সাক্ষাৎ করতেই হবে, যদি সেই দেশের সঙ্গে আপনার দেশের কোনও দেনা-পাওনা থাকে। কোনও হিসাব মেটানোর থাকে। কোনও আলোচনা থাকে। এভাবে পাকিস্তান ভারতের প্রধানমন্ত্রীরাও বৈঠক করেন। আমেরিকা-রাশিয়াও করেছে। ক্যাম্প ডেভিডে ইসরায়েল-আরবরাও করেছে। সেখানে আপনি সদিচ্ছা নিয়ে আলোচনায় এসেছেন সেই ভাব প্রকাশে আপনাকে তার সঙ্গে ছবি তুলতে হবে, করমর্দন করতে হবে। কিন্তু সেটা কখনও সার্বিক অবস্থার প্রতিফলন নয়। ভারত-পাকিস্তানের রাষ্ট্রপ্রধানের করমর্দনের হাস্যোজ্জ্বল ছবি কখনও বোঝায় না দুইদেশের মধ্যে বৈরিতা নেই।
একইভাবে ইয়াসির আরাফাতের সঙ্গে কোনও ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর আর্কাইভে থাকা ছবিগুলো দেখে এই সিদ্ধান্তে আসবেন না আরাফাত পালেস্টাইন আন্দোলন বা ফাতাহকে বিক্রি করে ইসরায়েলিদের পা চেটেছেন। বা আরবরা ইসরায়েলিদের সব পাপ ক্ষমা করে তাদের বুকে টেনে নিয়েছে। নিয়াজী চারঘণ্টা আগে ব্যাপক কান্নাকাটি করলেও ১৬ই ডিসেম্বর বিকেলে হাসিমুখেই সই দিয়েছে আত্মসমর্পনে। দিস ইজ প্রটোকল।
কথাগুলো বলা আসলে আমাদের একদল জ্ঞানপাপীর উদ্দেশ্যে। যারা ইচ্ছেকৃত ইতিহাসবিকৃতির মাধ্যমে, মনগড়া আরোপের মাধ্যমে মানুষকে বিভ্রান্ত করে। বড় কোনো অর্জনকে মিথ্যার মাধ্যমে তুচ্ছ ও ঘৃণিত বানিয়ে ফেলার অপচেষ্টা করে। যারা সাইনবোর্ডে চরম ডান বা চরম বাম হলেও মোক্ষে এক, ভাষায় ও নিন্দাবাদে এক। এবং তারা এখনও মন থেকে তাদের পুর্বসূরীদের মতো এই দেশের স্বাধীনতাকে মেনে নিতে পারেনি। নানা মিথ্যাচারের মতো নানা নুইসেন্স লজিকের মতো তারা মুজিব ভুট্টোর প্রসঙ্গ এনেছে, পাকিস্তানে ১৯৭৪ সালের বঙ্গবন্ধুর সেই ঐতিহাসিক সফরকে নোংরা বানিয়েছে।
কোনও দেশ স্বাধীন বলে নিজেকে ঘোষণা করলেই স্বাধীন হয়ে যায় না। সেই স্বাধীনতার স্বীকৃতি প্রয়োজন। আর যেই দেশের মানুষের বেঁচে থাকাই পরের সাহায্যের উপর নির্ভরশীল তার তো সেই মুখ থাকে না ভিক্ষার চাল কাড়া না আকাড়া যাচাই করার।