সিগারেটের প্যাকেটে খুচরা মূল্যের আগে ‘সর্বোচ্চ’ শব্দ লেখা নেই। আর তাতেই প্রতিদিন সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে প্রায় ২০ কোটি টাকা ভোক্তার পকেট থেকে অতিরিক্ত চলে যাচ্ছে, যা মাসে প্রায় ৬০০ কোটি আর বছরে দাঁড়ায় প্রায় ৭৩০০ কোটি টাকা। সিগারেট কিনতে ভোক্তার পকেট থেকে যাওয়া এ টাকার ওপর প্রতিদিন সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে প্রায় ১৩.৬৮ কোটি, মাসে প্রায় ৪১০.৪ কোটি এবং বছরে প্রায় ৪৯৯৩.২ কোটি টাকা। সরকার নির্ধারিত খুচরা মূল্যের চেয়ে খোলাবাজারে অধিক মূল্যে সিগারেট বিক্রয় হওয়ায় সরকার এই রাজস্ব হারাচ্ছে। তবে অভিযোগ উঠেছে, মূসক আইন ও বিধিতে ‘সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য’ লেখা থাকলেও সিগারেট কোম্পানিগুলো প্রভাব খাটিয়ে এসআরওতে ‘বিক্রয় মূল্য বা খুচরা মূল্য’ লেখিয়ে নিয়েছে। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে সিগারেট কোম্পানিগুলো প্যাকেটের গায়ে সর্বোচ্চ শব্দ লিখছে না। এতে একদিকে ভোক্তা ঠকছে, অন্যদিকে রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। রাজস্ব ফাঁকি রোধে এসআরও সংশোধন করতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) চিঠি দিয়েছে বৃহৎ করদাতা ইউনিট (এলটিইউ)। এনবিআর সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, ‘সরকার নির্ধারিত খুচরা মূল্যের চেয়ে খোলাবাজারে অধিক মূল্যে সিগারেট বিক্রয় হচ্ছে’Ñএমন অভিযোগের ভিত্তিতে সম্প্রতি বাজার পর্যবেক্ষণ ও যাচাই করে এলটিইউ। এতে অভিযোগের সত্যতা পায় এলটিইউ। ‘নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অধিক মূল্যে সিগারেট বিক্রি হওয়ায় রাজস্ব ক্ষতি ও মূল্যস্ফীতির কারণে ভোক্তার আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে’। এ বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে সম্প্রতি এলটিইউ’র সভা কক্ষে এলটিইউ ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মধ্যে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বলা হয়, এলটিইউতে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ কোম্পানি লিমিটেড (বিএটিবি) ও ইউনাইটেড টোব্যাকো কোম্পানি লিমিটেড (জেটিআই) নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান। এ দুটি প্রতিষ্ঠান বিদায়ী অর্থবছর প্রায় ২৮ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব দিয়েছে। একইসঙ্গে প্রায় ৭২০ কোটি মূল্যের তামাক পাতা ও সিগারেট রপ্তানি করেছে। মূসক খাতে আহরিত রাজস্বের প্রায় ৩০ শতাংশ সিগারেট খাত থেকে আসে।