ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন সাত মাস পেরিয়েছে। প্রথম পর্যায়ে রাশিয়ার সেনাবাহিনীর ঝটিকা আক্রমণে মনে করা হচ্ছিল, খুব কম সময়ের মধ্যে কিয়েভের পতন হবে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সর্বাধুনিক অস্ত্র, প্রশিক্ষণ ও গোয়েন্দা তথ্যে সজ্জিত ইউক্রেন পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তুললে রাশিয়া যুদ্ধকৌশল পাল্টায়। ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে রুশ ভাষাভাষীদের সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকায় নিজেদের অবস্থান সুসংহত করতে মনোযোগ দেয়। সম্প্রতি নিজেদের অধিকৃত খারকিভে বড় বিপর্যয়ের মুখে পড়ায় নতুন করে হিসাব কষতে হচ্ছে মস্কোকে।
রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ হলেও তা শুধু দেশ দুটির সীমানায় সীমাবদ্ধ নেই; এ যুদ্ধের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে হোক কিংবা ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছাকৃত হোক, জড়িয়ে পড়েছে বিশ্বের বড় একটা অংশ। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পশ্চিমা বিশ্ব এ যুদ্ধকে নিজেদের মর্যাদা, ভাবমূর্তি, মতাদর্শ, মূল্যবোধ ও বিশ্বব্যবস্থায় নিজেদের আধিপত্য ধরে রাখার বিষয় হিসেবে নিয়েছে। অন্যদিকে, পুতিনের নেতৃত্বে রাশিয়া পশ্চিমাদের আধিপত্য খর্ব করতে ও সভ্যতার শেষ যুদ্ধ হিসেবে গ্রহণ করেছে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মস্তিষ্ক বা মতাদর্শিক গুরু হিসেবে পরিচিত আলেকসান্দর দুগিন তো মনেই করেন, ইউক্রেন যুদ্ধ বা ইউক্রেনে পুতিনের বিশেষ সামরিক অভিযানে ইউরেশিয়া সাম্রাজ্যের পুনঃপ্রতিষ্ঠা ঘটতে যাচ্ছে। দুগিন মনে করেন, মস্কো হচ্ছে সভ্যতার সর্বশেষ কেন্দ্র। এর আগের দুটি কেন্দ্র হলো রোম ও বাইজেনটিয়াম। অনিবার্য নিয়তি হিসেবে মস্কো এখন সভ্যতার ত্রাণকর্তা।