১৯৬১ সালের আগস্ট মাস। আমি তখন ইংরেজি তৃতীয় বর্ষ অনার্সের ছাত্র। থাকি ঢাকা হলে (বর্তমান ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হল)। হল ইউনিয়নের আমি নির্বাচিত সাহিত্য সম্পাদক।
আইয়ুব সরকারের সৃষ্ট ন্যাশনাল স্টুডেন্টস ফেডারেশনের (এনএসএফ) বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিকড় গাড়ার লক্ষ্যে সরকার তখন নানা তৎপরতা চালাচ্ছে। হলের প্রভোস্ট-হাউস টিউটরের পদগুলোতে বেছে বেছে সরকারের পায়বন্দ লোকদের বসানো হচ্ছে। এমনি এক হুজুর ঢাকা হলের প্রভোস্ট হয়ে এসেই মনোযোগ দিলেন হলকে ‘ক্ষত্রিয়শূন্য’ অর্থাৎ ছাত্র ইউনিয়ন-শূন্য করে এনএসএফ-কে মজবুত করতে। সেই অপারেশনের প্রথম বলি হলাম আমি। আমার এক সহপাঠীর সঙ্গে সামান্য ঝগড়াঝাঁটির অজুহাতে ২৪ ঘণ্টার নোটিশে আমাকে হলছাড়া করলেন প্রভোস্ট। এর পরের দুই বছর—অনার্স ফাইনাল ইয়ার ও এমএ ফাইনাল ইয়ার—আমার কাটল বলতে গেলে ‘যেখানে রাত, সেখানে কাত’ অবস্থায়। ওই বছরের আসন্ন হল ইলেকশনে আমার ভিপি/জিএস পদে নির্বাচন করার কথা। কিন্তু স্বৈরাচারী প্রভোস্ট তাঁর মিশন সফল করার উদ্দেশ্যে শুধু আমাকে ঢাকা হল নয়, আমি যাতে আর কোথাও সিট না পাই সে ব্যবস্থাও করলেন। ফলে আমার লেখাপড়া প্রায় শিকেয় ওঠার উপক্রম হলো।