ভ্লাদিমির পুতিন, ভলোদিমির জেলেনস্কি ও জো বাইডেন। তিনজনেরই ঘড়ির কাঁটা ঘুরছে, কিন্তু তিন গতিতে। পুতিনের স্পেশাল মিলিটারি অপারেশনের গতিটা ছিল ধীর। এতই ধীর যে মিলিটারি অপারেশন আর ছয় মাসেও শেষ হওয়ার সুযোগ এল না; বরং সেটা এখন ন্যাটো বনাম রাশিয়ার ‘ফুল ভলিউম কনসার্ট’ হয়ে উঠেছে। জেলেনস্কি টিকে থাকছেন প্রতিদিনকার ভিত্তিতে। প্রতিদিন লড়তে পারা মানে আরও এক দিন সুযোগ পাওয়া। যদিও জানেন না কখন কোথায় রুশ মিসাইল এসে পড়বে, কখন রুশ আততায়ী তাঁকে নিশানা করবে। বাইডেনের ঘড়ির গতিও পুতিনের মতোই ধীর। শুরু থেকেই যুক্তরাষ্ট্র ন্যাটোকে দিয়ে দীর্ঘ যুদ্ধের প্রস্তুতি নিয়ে রাখছিল, ইউক্রেনকেও যুদ্ধের অনেক আগে থেকেই রাশিয়ার জন্য ফাঁদ হিসেবে তৈরি করা হচ্ছিল। পুতিনও সময় নিচ্ছিলেন। কিন্তু খারকিভ থেকে রাশিয়ার সেনা প্রত্যাহার ও সেই এলাকায় ইউক্রেনের আপাত বিজয়ে মনে হচ্ছে, যুদ্ধ বরং দীর্ঘই হতে যাচ্ছে।
অবশ্য পুতিন বলেছিলেন, তাঁর স্পেশাল মিলিটারি অপারেশন (এসএমও) দীর্ঘ হবে না। কিন্তু ইতিমধ্যে ছয় মাস পেরিয়ে গেছে। তাহলে কি রাশিয়ার পরিকল্পনায় ভুল ছিল? না হলে দুই দফা পিছু হঠতে হলো কেন? এ বছরের মার্চ-এপ্রিলে কিয়েভের দোরগোড়ায় হানা দিয়েও ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছিল রুশ বাহিনী। আর এই সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি উত্তর–পশ্চিম ইউক্রেনের খারকিভ থেকেও তড়িঘড়ি করে সৈন্য সরিয়ে নিতে হলো রাশিয়াকে। এ ঘটনায় পশ্চিমা গণমাধ্যমে রাশিয়ার সম্ভাব্য পরাজয়ের আলাপ জমে উঠেছে।
অথচ পুতিন এখনো চাঙা। মধ্যযুগীয় সিল্ক রুটের গঞ্জ-শহর সমরখন্দে মিলিত হয়েছিলেন রুশ, ভারত ও চীনের তিন নেতা। সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) নামের চীনা নেতৃত্বের এই আন্তর্জাতিক জোটে সংলাপ অংশীদার তুরস্ক, এবারই পূর্ণাঙ্গ সদস্যপদ পেল ইরান। এ সম্মেলনেই রুশ প্রেসিডেন্ট ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীকে যুদ্ধ দ্রুতই শেষ করার আশ্বাস দিয়েছেন। চীনা প্রেসিডেন্ট কোভিড সময়ের দুই বছর পর এই প্রথম বিদেশ সফর করলেন। পুতিন-সির মধ্যে বন্ধুত্ব কতটা, তা এই বাক্যেই বোঝা যায়। সি বলেছেন, ‘ইউক্রেনকে দিয়ে রাশিয়াকে ঘায়েল করার পশ্চিমা প্রচেষ্টা অত্যন্ত দুঃখজনক।’