“মেয়ে মানুষ, রাতের বেলায় বাসায় যাওয়ার চিন্তা করেন?” গণ পরিবহনে হঠাৎ বাজে ইঙ্গিত করে এমন কথা শুনে চটেছিলেন সাদিয়া সাকি। কিন্তু সে ঘটনার কোনো প্রতিকার তিনি পাননি।
“কথাটা শুনেই তো আমার মাথা গরম হয়ে গেল। আমি আমার ফ্রেন্ডদেরকে ফোন করা শুরু করলাম। তখন বাসটা আমায় দ্রুত নামায়ে দিয়ে চোখের পলকে চলে গেছে।”
রোজ সাভার থেকে বসিলার এক বাসায় টিউশনে যেতেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের ছাত্রী সাদিয়া। একদিন টিউশন থেকে বেরিয়ে সাভারগামী বাসে এমন তিক্ত অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হন।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের কাছে ২০২১ সালের সেই ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, “ততক্ষণে চারদিকে সন্ধ্যা নেমে এসেছে। আমি তখন ঘরে ফেরার সময় গুণছি।”
কিন্তু সাকি তার ঘর, অর্থাৎ ক্যাম্পাসে পৌঁছানোর আগেই ‘বাড়তি ভাড়া’ দাবি করার প্রতিবাদে বাস চালকের সহকারীর সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন।
সাকি আফসোস করে বলেন, “বন্ধুরা আসতে আসতে দেরি হয়ে যাওয়ায় সেদিন কোনো ব্যবস্থা নিতে পারিনি।”
কিন্তু এই কিছুদিন আগে তিনি আবারও একটি লোকাল বাসে একই ধরনের হয়রানির শিকার হয়ে সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯ এ কল দিয়েছিলেন।
“যখন তেলের দাম বাড়লো, তখন হইছে এটা। আমি একটা টিউশন শেষ করে মোহাম্মদপুর থেকে শিশুমেলা যাচ্ছিলাম। তখন প্রায় ৮টা বেজে গেছে। বাসওয়ালা বলল, ৮টার পরে স্টুডেন্ট ভাড়া নেবে না। এ নিয়ে খুব গ্যাঞ্জাম লাগল।
“আশপাশের লোকজন আমায় বলতেছিল, আপা চুপ থাকেন। তখন আমি ৯৯৯ এ কল দিলাম। আমার থেকে তারা বাসের নম্বর নিল। তারপর তারা হাফ ভাড়াই নিছে এবং বাড়তি টাকা ফেরতও দিছে।”
জাতীয় জরুরি সেবা নম্বরে যে ধরনের ফোন আসে, সেই তথ্য পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, নারীকে হয়রানি, নিপীড়ন, আর সহিংসতার অভিযোগ জানাতে বা সাহায্য চেয়ে ফোন কলের সংখ্যা প্রতিবছরই বাড়ছে।
এ বছর অগাস্ট পর্যন্ত এ ধরনের কল এসেছে মোট ১৩ হাজার ৪১৬টি, যেখানে ২০২১ সালে পুরো বছর মিলে এমন কলের সংখ্যা ছিল ১২ হাজার ১৬৯টি।