ছেলে-মেয়ে, নাতি-নাতনি মিলে পরিবারের ২২ জনকে নিয়ে হঠাৎ করেই আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছেন মুন্সীগঞ্জের বাংলাবাজার ইউনিয়নের শম্ভু হালদারকান্দি গ্রামের যুগমায়া রানী। সাত দিন আগে যেখানে তাদের ঘর ছিল, সেখানে এখন প্রমত্তা পদ্মা।
যুগমায়ার মতো প্রায় ৩০০ পরিবার এখন ভিটে-মাটি হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে কিংবা অন্য গ্রামে স্বজনদের আশ্রয়ে দিন কাটাচ্ছেন। গত দেড় মাসে শম্ভু হালদারকান্দি আর পাশের সরদারকান্দি গ্রামের অনেকটাই চলে গেছে পদ্মার গ্রাসে।
পদ্মা কেবল মুন্সীগঞ্জে নয়, ফরিদপুরেও গ্রাস করছে জনবসতি, ফসলের জমি। মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলায় ভাঙছে ইছামতী আর ধলেশ্বরীর তীর। মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার চর পাচুড়িয়ার মানুষকে নিরাশ্রয় করছে মধুমতি।
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যমুনা, শেরপুরের নালিতাবাড়ী পৌর শহরের তারাগঞ্জ আড়াইআনী এলাকায় ভোগাই নদী, ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলায় বিষখালীর ভাঙনও হাহাকার বাড়াচ্ছে। লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলা একটু একটু করে ভেঙে নিচ্ছে মেঘনা।
দেশে নদী ভাঙনের এই চিত্র নতুন নয়। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীন সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিসেস (সিইজিআইএস) তাদের ২০২২ সালের পূর্বাভাসে বলছে, চলতি মওসুমে দেশের নদী অববাহিকার ১২ জেলার ১৭টি এলাকা ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে।
এই পূর্বাভাস ঠিক হলে প্রায় ১৮০০ হেক্টর জমি, বসতবাড়িসহ সড়ক, বাঁধ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাটবাজার, কবরস্থান, এতিমখানাসহ অন্যান্য অবকাঠামো মুছে যেতে পারে মানচিত্র থেকে।
সিইজিআইএস এর ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক মালিক ফিদা আব্দুল্লাহ খান অবশ্য বলছেন, সরকারের নেওয়া নানা উদ্যোগের ফলে গত দেড় যুগে নদী ভাঙনের ঝুঁকির মাত্রা অনেকটা কমিয়ে আনা গেছে।