সম্প্রতি আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য পঙ্কজ দেবনাথকে এবং জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মসিউর রহমানকে (রাঙ্গা) নিজ নিজ দলের সব পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে মসিউর রহমান একসময় দলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। অন্যদিকে পঙ্কজ দেবনাথ ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক।
এই দুই অব্যাহতিপত্র কেবল দুই দলীয় সংসদ সদস্যকে কঠোর বার্তা নয়, অন্যদেরও বুঝিয়ে দেওয়া হলো যে দলের হাইকমান্ডের আদেশ-নিষেধ না মানলে তঁাদেরও একই পরিণতি হবে।
আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত অব্যাহতিপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদ সংগঠনের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী অর্পিত ক্ষমতাবলে প্রাতিষ্ঠানিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে আপনাকে আওয়ামী লীগ বরিশাল জেলা শাখার উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য পদসহ দলীয় অন্য সব পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করেছে। উক্ত বিষয়ে আপনার লিখিত জবাব আগামী ১৫ দিনের মধ্যে কেন্দ্রীয় দপ্তর বিভাগে জমা প্রদান করার জন্য সাংগঠনিক নির্দেশক্রমে অনুরোধ জানানো যাচ্ছে।’
অবশ্য দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি পেলে আওয়ামী লীগের পঙ্কজ দেবনাথ ও জাতীয় পার্টির মসিউর রহমান সংসদ সদস্য পদ হারাবেন না। সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘যদি কোনো সংসদ সদস্য, যে দল তাহাকে নির্বাচনে প্রার্থীরূপে মনোনীত করিয়াছে, সেই দলের নির্দেশ অমান্য করিয়া ক. সংসদে উপস্থিত থাকিয়া ভোটদানে বিরত থাকেন অথবা খ. (ভোটাভুটির সময়) সংসদের কোনো বৈঠকে অনুপস্থিত থাকেন, তাহা হইলে তিনি উক্ত দলের বিপক্ষে ভোটদান করিয়েছেন বলিয়া গণ্য হইবে।’
তাঁরা কেউ দলের বিপক্ষে ভোট দেননি কিংবা দল থেকে বহিষ্কারও করা হয়নি। এর মধ্যে পঙ্কজ দেবনাথকে আওয়ামী লীগের সব পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার পাশাপাশি ১৫ দিনের মধ্যে তাঁর লিখিত জবাব চাওয়া হয়েছে। জাতীয় পার্টিতে এই জবাব দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সেখানে সব সময়ই একতরফা সিদ্ধান্ত হয়। জাতীয় পার্টি ও বিএনপির গঠনতন্ত্রে ‘গণতন্ত্র’ বলে কোনো শব্দ নেই। দুই দলের চেয়ারম্যানের হাতে অপরিসীম ক্ষমতা। তিনি চাইলে যে কাউকে যেকোনো পদে বসাতে পারেন, যেকোনো পদ থেকে সরিয়ে দিতে পারেন। আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র গণতান্ত্রিক। কিন্তু সেখানেও গণতন্ত্রচর্চা কতটা হয়, সে বিষয়ে সন্দেহ আছে।