আমরা যে শিক্ষা গ্রহণ করি, তার উপাদান প্রায়ই প্রকৃতি এবং সমাজের সমস্যার মধ্যেই খোদিত থাকে। সেখান থেকে সৃষ্টি হয় পাঠ্যবই। তাহলে এর উৎসমূলে গিয়ে ব্যবহারিক শিক্ষার ব্যবস্থা করলে ভালো ফলের আশা করা যায়।
মানুষ হলো গাছের মতো। গাছের ওপর যখন সূর্যের আলো এসে পড়ে, তখন তার ছায়া দৃষ্টিসীমার মধ্যে আসে। এই ছায়ায় এসে আশ্রয় নেয় সবাই, রৌদ্রের খরতাপ থেকে মুক্তি পায়। এটা বিজ্ঞানের সরল হিসাব। ঠিক এ রকমভাবেই শিক্ষা হলো সূর্যের মতো। যখন শিক্ষা মানুষের মধ্যে প্রবেশ করে, তখন তার ভেতর থেকে বের হতে থাকে বোধ, ব্যুৎপত্তি, মননশীলতা, সৃজনশীলতা, নতুন নতুন চিন্তা, ন্যায়-অন্যায়ের ধারণা, প্রজ্ঞা এবং আত্মনির্ভরশীলতার মতো গুরুতর বিষয়। আর এগুলোর ছায়াতলে মানুষ আশ্রয় নেয় দুর্যোগ-দুর্বিপাকে। এই শিক্ষা মানুষের অন্ধকার প্রদেশে আলো ফেলে অন্ধকারের ঝাড় কেটে চলে অবিরাম। অবশ্যই এটি একটি জীবনব্যাপী প্রক্রিয়া। যদি যথাযথ শিক্ষা মানুষের মধ্যে না পৌঁছায়, তাহলে তার ছায়া তৈরি হবে না—এটাই স্বাভাবিক। ঠিক যেন সূর্যের মতো। যদি কুয়াশার জাল চারদিকে ছেয়ে যায়, তাহলে অবশ্যই আলো পৌঁছাবে না। আর ছায়া তো দূরের কথা, বলা দরকার, শিক্ষার মাধ্যমেই মানুষ নিজের মধ্যে নিজেকে ভেঙে নতুনভাবে জানার, বোঝার ও জানানোর সুযোগ পায়। শিক্ষাই মানুষকে পশু থেকে মানুষে পরিণত করে।