মোহাম্মদপুর টাউন হল বাজারের কাছে একটি ক্যাম্প আছে। সবাই বলে বিহারিক্যাম্প। ওখানে বিহারিদের সংখ্যা ঠিক কত, তা জানা না থাকলেও ময়মনসিংহ থেকে কাজ করতে আসা প্রচুর নারী-পুরুষ ওখানে বসবাস করেÑ সেটি জানি। সামান্য জায়গায় উঁচু উঁচু বিল্ডিংয়ে তাদের বসবাস! মোহাম্মদপুরের অনেকটাজুড়েই তাদের কর্মক্ষেত্র। ময়মনসিংহ থেকে আসা মেয়েরা সব এখানকার বাসাবাড়িতে কাজ করে আর পুরুষরা সিজন্যাল ভ্যানচালক, বাকি সময় দেশে গিয়ে ক্ষেত-খামারে কাজ করে। দুই দিন আগে টিভির খবরে ওখানকার গ্যাসের সব অবৈধ লাইন কেটে দিতে দেখলাম। আমাদের বাড়িগুলোয় কাজ করতে আসা গৃহকর্মীরাও ওখানে বসবাস করে। তাই ক্যাম্পের ভেতরটা না দেখলেও ওখানে বসবাস করা মানুষজনের ঘরবসতির পুরো চিত্রই চেনা। একদম আলাদা একটি দুনিয়া। মাছ-সবজির বাজার থেকে শুরু করে, লন্ড্রি, দরজি, এমনকি ওষুধের দোকানসহ ডাক্তারও আছেন ওখানেÑ যিনি প্রাথমিক চিকিৎসাটুকু অন্তত দিতে পারেন।
একেক দিন একেকটি গল্প নিয়ে হাজির হওয়া আমাদের সিঁড়ি পরিষ্কার রাখার কর্মী আজ জানাল, ছয়তলা উঁচু বিল্ডিংয়ের ওপর থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেছিল এক মেয়ে। ভাগ্য খারাপ থাকায় বেঁচে গেছে! ভাগ্য খারাপ বলার কারণ হলো, পড়ে গিয়ে তার শরীরের নিচের অংশ পুরোই থেঁতলে গেছে। বলতে বাধ্য হলাম, মরে গেলেই ভালো হতো, বেঁচে যেত! গাজীপুরের একটি কারখানার এক শ্রমিকের সঙ্গে ওই মেয়ের সম্পর্ক হয়েছিল। সেও কোথায় জানি কাজ করে। এ ক্যাম্পে দুজনই দুজনের আত্মীয়র বাড়ি বেড়াতে এসে প্রেম করতে বের হয়েছিল। প্রেম ফেলে সেখানেই ঝগড়াঝাটি। অতঃপর ক্যাম্পে ফিরে ওই মেয়ের আত্মহত্যার চেষ্টা! সেই ছেলে নাকি ওই মেয়েকে সাফ জানিয়ে দিয়েছিলÑ প্রেমিকা নয়, তাকে বন্ধু মনে করে সম্পর্ক এগিয়েছিল! প্রেমিক আর বন্ধুর পার্থক্য না বুঝেই মরার সিদ্ধান্ত নিয়ে নিল ওই মেয়ে! কে বলে নারী এগোয়নি।