স্কুলগেটের সামনে নারীটিকে দেখে হাসিমুখে এগিয়ে গিয়েছিলাম, ‘কেমন আছেন, অনেক দিন পর দেখা।’ উনি কেমন যেন সিঁটিয়ে গেলেন। এদিক-ওদিক তাকালেন দু-একবার। তাঁর এই আচরণে ভীষণ অবাক হয়ে বললাম, ‘কী হয়েছে? কোনো সমস্যা?’
ওই নারী ধরা গলায় বললেন, ‘আপনি জানেন না বোধ হয়। আমার ছেলে রক্তিম, খুব দুষ্টু তো, ক্লাসে এর-ওর সঙ্গে মারামারি করে। ভীষণ চঞ্চল। আবার রেজাল্টও খুব খারাপ করেছে এবার। স্কুলে রোজ অভিযোগ। ক্লাসের সব বাচ্চা ঠিক করেছে, ওর সঙ্গে কেউ মিশবে না। এমনকি মায়েরাও বলে দিয়েছেন যেন রক্তিমের সঙ্গে কেউ না মেশে। আর মায়েরা ঠিক করেছেন যে আমার সঙ্গেও কেউ মিশবেন না। তাহলেই নাকি উপযুক্ত শিক্ষা হবে।’
হতভম্ব হয়ে ওনার দিকে চেয়ে রইলাম। কী বলছেন এসব? রক্তিমের মা এবার ঝরঝর করে কেঁদে ফেললেন।
ওপরের ঘটনাটি একবিন্দু মিথ্যা নয়, শুধু ছেলেটির নাম বদলে দিয়েছি। প্রায় ১০ বছর আগের ঘটনা এটি। তারপর জেনেছি আরও অনেক ঘটনা। কেবল দুষ্টু আর খারাপ ছাত্র বলে নয়, আমার এক বন্ধুর ছেলে দেখতে শ্যামবর্ণ, স্কুলের বন্ধুরা তাই তার সঙ্গে মিশত না। এড়িয়ে যেত, বুলিং করত, মন্দ কথা বলত। আমার বন্ধুটি তার শিশুটিকে নিয়ে শেষ পর্যন্ত মনোরোগবিদের কাছে যেতে বাধ্য হয়েছিল। কারণ, তার সন্তান স্কুলে যাবে না বলে বিদ্রোহ করেছিল।