আজকাল ওটিটি প্লাটফর্মে থ্রিলারের জয়জয়কার চলছে। অনেক প্লাটফর্ম নাকি খুঁজেও ভালো থ্রিলার কাহিনি পাওয়া যাচ্ছে না। কাহিনিকারদের এখন আর খুব একটা কষ্ট না করলেও চলবে।
স্রেফ সাকিব আল হাসানকে অনুসরণ করতে থাকুন। ক্রিকেট, ক্রাইম, থ্রিল, রোমাঞ্চ, সাসপেন্স, হাসি, কান্না; সব পাবেন একসাথে। যেকোনো মারমার কাটকাট সিরিজকে টেক্কা দিয়ে ফেলতে পারে সাকিব আল হাসানের কর্মকাণ্ড। সর্বশেষ ‘সিজনে’ সাকিব ঘটালেন বেটিং ওয়েবসাইট বিতর্ক।
সেই শুরু থেকেই সাকিব আল হাসান বাংলাদেশের ক্রিকেটে, বলা ভালো বিশ্ব ক্রিকেটে এক অনন্য চরিত্র হয়ে উঠেছেন। যত না মাঠে সংবাদের শিরোনাম হয়েছেন, তারচেয়েও বেশি মাঠের বাইরে সংবাদের শিরোনাম হয়েছেন এবং হচ্ছেন।
একমাত্র ডিয়েগো ম্যারাডোনাকে আপনি এর সাথে তুলনীয় বলতে পারেন। দু’জনই মাঠে নামলে চ্যাম্পিয়ন, মাঠের বাইরে এলেই বিতর্ক।
কী করেননি সাকিব তার এই ছোট্ট জীবনে। অন ক্যামেরায় অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি, দর্শক পেটানো, বিসিবির আইন ভাঙা, অ্যাম্পায়ার পেটাতে যাওয়া, সামাজিক উসকানিতে জড়ানো, ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব গোপন; হেন কোনো কাণ্ড নেই, যা সাকিবের বইয়ে ঘটেনি এখনো।
ফলে সাকিব যখন বেটউইনার নামে একটা বেটিং ওয়েবসাইটের সাথে জড়িত নিউজ পোর্টালের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হলেন, সেটা মোটেও খুব বিস্ময়কর কাণ্ড ছিল না। তবে অবাক কাণ্ড ছিল, সাকিব এবার রাষ্ট্রীয় আইনকানুনেরও পাত্তা দিলেন না।
বাংলাদেশের আইনে বেটিং একেবারেই নিষিদ্ধ একটা ব্যাপার। জুয়া ঠেকানোর জন্য সরকার মাত্র কিছুদিন আগেই বিরাট এবং বিশেষ অভিযান চালিয়েছে। ফলে সরকারের এক্ষেত্রে কঠোর অবস্থান তার অজানা থাকার কথা নয়। তারপরও তিনি কাজটা করলেন।
অবশ্য সাকিবের পক্ষে একটা কু-যুক্তি দেওয়া হচ্ছিল, সাকিব তো সরাসরি বেটিং সাইটের সাথে জড়াননি। তিনি জড়িয়েছেন একটা নিউজ পোর্টালের সাথে। কিন্তু সাকিব নিজে একাউন্ট বা সারগোট প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারটা বোঝেন না, এটা বললে ভুল হবে।
আমার জানা ও বোঝা মতে, সাকিব বাংলাদেশের একজন তুখোড় ব্যবসায়ী মস্তিষ্ক। তিনি ক্রিকেটের খোঁজখবর যতটা রাখেন, ব্যবসার খোঁজখবর তারচেয়ে বেশিই রাখেন। ফলে বেটউইনার কেন তাকে কোটি কোটি টাকা দিচ্ছে, এটা না বোঝার মতো শিশু তিনি নন। আর বিসিবির আইনে পরিষ্কার বলা আছে যে, কোনো জুয়াড়ি সংস্থার সহযোগী প্রতিষ্ঠানেও সম্পৃক্ত হওয়া যাবে না।