১. বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) বোধকরি দেশের বৃহত্তম সেক্টর করপোরেশন। আয়-ব্যয়, স্থিতি কিংবা কার্যপরিধি সব বিবেচনায়ই বড়। বিশেষ গুরুত্বপূর্ণও বটে। কিন্তু এর হিসাব-নিকাশের স্বচ্ছতা ও যথার্থতা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রশ্নবোধক চিহ্ন ছিল। এবার সেই চিহ্নটি একেবারে নিরেট প্রমাণ হয়ে প্রকাশিত হয়েছে। মাত্র সাত বছরের মুনাফার হিসাবে প্রায় চার হাজার কোটি টাকার গরমিল ধরা পড়েছে।
বিপিসির চেয়ারম্যান এ বি এম আজাদ গত বুধবার ডাকা এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে সংস্থাটির গত ২২-২৩ বছরের একটি হিসাব উল্লেখ করেছেন। তারই এক জায়গায় বলেছেন, ২০১৪-১৫ থেকে ২০২০-২১ অর্থবছর পর্যন্ত (৭ বছরে) তাঁরা সর্বমোট ৪২ হাজার ৯৯৩ কোটি টাকা মুনাফা করেছেন। কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত ‘বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমীক্ষা ২০২২’-এ উল্লেখ আছে যে, ওই ৭ বছরে বিপিসি প্রকৃত মুনাফা করেছে ৪৬ হাজার ৮৫৮ কোটি টাকা। সেই হিসাবে সংবাদ ব্রিফিংয়ে বিপিসির চেয়ারম্যানের দেওয়া তথ্য এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের সমীক্ষা প্রতিবেদনের তথ্যের মধ্যে ব্যবধান হচ্ছে ৩ হাজার ৮৬৫ কোটি টাকা।
রাষ্ট্রীয় খাতের সর্ববৃহৎ প্রতিষ্ঠানটির হিসাব-নিকাশে এই গুরুতর গরমিল কীভাবে হলো, অবিলম্বে তার ফয়সালা হওয়া প্রয়োজন। বিপিসির হিসাব-নিকাশের স্বচ্ছতা ও যথার্থতা নিয়ে সরকারের উচ্চপর্যায়ে এবং আন্তর্জাতিক ঋণদানকারী সংস্থাগুলোর মধ্যে আগেও আলোচনা হয়েছে। কয়েক বছর আগে একবার আন্তর্জাতিক কোনো বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিপিসির প্রতিষ্ঠাকাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত আয়-ব্যয় নিরীক্ষার প্রয়োজনীয়তার কথাও উঠেছিল। কিন্তু এখন পর্যন্ত তেমন কোনো উদ্যোগ আমরা দেখতে পাচ্ছি না।