রডের দাম আবার বাড়তে শুরু করেছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে খুচরা পর্যায়ে নির্মাণ খাতের এই প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দাম প্রতি টন সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। তাতে ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় প্রতি টন রড বিক্রি হচ্ছে ৮৭ হাজার ৭০০ টাকা থেকে ৯১ হাজার ৮০০ টাকায়।
ইস্পাত খাতের ব্যবসায়ীরা বলছেন, তিন কারণে রডের দাম বাড়ছে। প্রথম কারণ হচ্ছে, ডলারের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি। এ জন্য কাঁচামাল আমদানি খরচ বেড়েছে ২০ শতাংশ। দ্বিতীয় কারণ, জ্বালানির দাম বাড়ায় চলতি সপ্তাহে বেড়েছে পরিবহন খরচ। গত শুক্রবার মধ্যরাত থেকে সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম ৪২-৫১ শতাংশ বাড়িয়েছে সরকার। আর তৃতীয় কারণ, গ্যাস-বিদ্যুতের সংকটে উৎপাদন কমে গেছে। তাতে রডের উৎপাদন খরচ বেড়েছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, আগে চট্টগ্রাম থেকে এক টন রড ঢাকায় আনতে ন্যূনতম ১ হাজার ১০০ টাকা পরিবহন খরচ লাগত। জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির পর বাড়তি লাগছে ২৭৫ টাকা। তা ছাড়া ঢাকার ভেতরে রড পরিবহনে প্রতি টনে ট্রাকভাড়া ৫০০ থেকে বেড়ে ১ হাজার টাকা হয়ে গেছে।
অবশ্য বাংলাদেশ স্টিল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএসএমএ) চেয়ারম্যান মানোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘বর্তমানে রডের যে দাম বাড়ছে, তা শুধু ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে। ৮৫ টাকার ডলার বর্তমানে ১০৫-১০৮ টাকা হয়ে গেছে। ১০৫ টাকাও যদি ধরি তাহলে রডের দাম টনপ্রতি ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। তাতে প্রতি টন রডের দাম ৯৭ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা হয়ে যাবে। আমরা দাম বাড়াতেও ভয় পাচ্ছি। কারণ, এত দাম বাড়লে বিক্রি কমে যেতে পারে।’
বিএসএমএর তথ্যানুযায়ী, চলতি সপ্তাহে কোম্পানিভেদে প্রতি টন রডের গড় মূল্য দাঁড়িয়েছে ৮৮ হাজার থেকে ৮৯ হাজার টাকা। গত সপ্তাহে এই দাম ছিল ৮৭ হাজার থেকে ৮৭ হাজার ৫০০ টাকা। এই দামের সঙ্গে পরিবহন ও শ্রমিকের মজুরি যোগ হয়। ফলে খুচরা পর্যায়ে এলাকাভেদে দাম ভিন্ন হয়ে থাকে।
নারায়ণগঞ্জের পাগলার আহসান এন্টারপ্রাইজের ব্যবস্থাপক মো. মিলন জানান, বাজারে এখন বিএসআরএমের রড বিক্রি হচ্ছে ৯১ হাজার ৮০০ টাকা টনে। গত সপ্তাহে এই দাম ছিল ৮৮ হাজার ৫০০ টাকা। আর অন্যান্য কোম্পানির রড বিক্রি হচ্ছে গড়ে ৮৭ হাজার ৭০০ টাকায়। গত সপ্তাহে এসব রডের দাম ছিল ৮৫ হাজার টাকা টন।