সতেজ নিশ্বাস, প্রাণখোলা হাসি মানুষকে আপন করে নেয়। এর ঠিক উল্টোটাই ঘটে, যদি নিশ্বাস হয় অস্বাস্থ্যকর। মানুষ তখন প্রাণখুলে হাসতে পারে না বা হাসতে সংকোচ বোধ করে। মুখের স্বাস্থ্যের ব্যাপারে ধারণা না থাকলে এমন পরিস্থিতি হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, মুখে অসুখ আছে বিশ্বে এমন মানুষের অনুমিত সংখ্যা ৩৫০ কোটি। এদের মধ্যে প্রায় ২০০ কোটি মানুষের স্থায়ী দাঁতের ক্ষয়জনিত সমস্যা আছে। ক্ষয়জনিত সমস্যা শিশুদের প্রাথমিক দাঁতের ক্ষেত্রেও দেখা যায়। বিশ্বব্যাপী এই সমস্যায় থাকা শিশুর সংখ্যা প্রায় ৫২ কোটি। সাধারণভাবে মুখের অসুখ প্রতিরোধযোগ্য।
দাঁত, জিহ্বা, মুখের ভেতরের নরম ও শক্ত টিস্যুর গড়ন ত্রুটিপূর্ণ হলে মুখে সমস্যা হয়। আবার নিয়মিত মুখ পরিষ্কার না করলেও সমস্যা দেখা দিতে পারে। মুখের স্বাস্থ্য খারাপ হলে দাঁত ক্ষয় হয়, মাড়ি ফুলে যায়, মুখে দুর্গন্ধ হয়, নিশ্বাস সতেজ থাকে না। শিশু ও কিশোর-কিশোরীরা মুখ ও দাঁতের রোগের ঝুঁকিতে বেশি থাকে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, মুখের অসুখ মানসিক চাপ তৈরি করে, এতে জীবনমান কমে যায়।
পান-জর্দা, ধূমপান, মদ পান অধিকাংশ মুখের রোগের কারণ। অস্বাস্থ্যকর খাবার এবং মিষ্টিজাতীয় খাবারও মুখের রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। এসব কারণে হৃদ্রোগ, ক্যানসার, দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসতন্ত্রের রোগ এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি তৈরি হয়। এই চারটি অসংক্রামক ব্যাধির সঙ্গে মুখের অসুখের সম্পর্ক থাকে বলে অনেকেই মনে করেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, মুখ বা দাঁতের রোগের ক্ষেত্রে বৈষম্য দেখা যায়। ধনী দেশগুলোর তুলনায় এই সমস্যা নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে বেশি। আবার একই দেশের দরিদ্র ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর মধ্যে এই সমস্যা সামঞ্জস্যহীনভাবে বেশি। আর্থসামাজিক অবস্থার সঙ্গে মুখের অসুখের প্রকোপ হ্রাস-বৃদ্ধির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে। আয় উপার্জন কম হলে, শিক্ষার স্তর নিচের দিকে হলে সেই জনগোষ্ঠীতে এই প্রকোপ বেশি থাকে। এই সমস্যা শুরু হয় শিশু বয়সে, চলতে থাকে বৃদ্ধ বয়স পর্যন্ত।