দেশের মোট চাহিদার বড় একটি অংশের জোগান দেয় সামুদ্রিক মাছ। হঠাৎ ডিজেলের দাম প্রায় ৪০ শতাংশ বাড়ায় খরচ বাড়বে সামুদ্রিক মৎস্য আহরণে। যার প্রভাব পড়বে মাছের দামে। রাতে ডিজেলের দাম বাড়ানোর ঘোষণার পর শনিবার (৬ আগস্ট) সকাল থেকেই সাগরে মাছ শিকারে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে বাণিজ্যিক ট্রলারগুলো। ফিশিং সেক্টরের পাশাপাশি এর সরাসরি প্রভাব পড়বে সাধারণ ভোক্তার ওপর।
ফিশিং শিল্পে জড়িতরা বলছেন, আট মাসের ব্যবধানে দুবার ডিজেলের দাম বেড়েছে। ৬৫ টাকার ডিজেল আট মাসের ব্যবধানে ১১৪ টাকা হয়েছে। এটা ফিশিং সেক্টরের জন্য বড় ধরনের ধাক্কা। কারণ সামুদ্রিক মৎস্য শিকারে ব্যবহৃত নৌযানগুলোর বেশি ব্যয় হয় জ্বালানিতে। এখন ফিশিংয়ের ব্যয় আরও বেড়ে যাবে। বাড়বে মাছের দামও। এতে এ শিল্পের জড়িতদের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন ভোক্তারাও।
মেরিন হোয়াইট ফিশ ট্রলারস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র সহ-সভাপতি ছৈয়দ আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, আমাদের স্টিল বডি বাণিজ্যিক জাহাজগুলোর প্রতি ট্রিপে সাগরে মাছ শিকারে যেতে ৬০ থেকে ৮০ টন পর্যন্ত ডিজেল নিতে হয়। ১৮শ হর্স পাওয়ারের ট্রলারগুলোতে ১০০ টনের মতো ডিজেল লাগে। এখন ৮০ টাকার ডিজেল ১১৪ টাকা হয়েছে। এতে যাদের ১০০ টন তেল লাগে, তাদের প্রায় ৩৪ লাখ টাকা এক ট্রিপেই খরচ বেড়ে গেছে। সেই হিসাবে বাজারে মাছের দাম পাওয়া যাবে না। আবার মাছের দাম বাড়লেও তা সাধারণ ভোক্তাদের ওপর প্রভাব পড়বে।’
তিনি বলেন, ‘ফিশিং সেক্টরে জ্বালানি খরচটাই মুখ্য। আগে কখনো এহারে জ্বালানির দাম বাড়েনি। এখন ডিজেলের দাম বেড়েছে প্রায় ৩০ শতাংশ। এতে ফিশিং সেক্টর মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়বে।’
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, বঙ্গোপসাগরে ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গ কিমি এলাকাজুড়ে বাংলাদেশের সীমানায় মৎস্য শিকার করে প্রায় ৬৮ হাজার নৌযান। এর মধ্যে প্রায় ৩৩ হাজার নৌযান রয়েছে ইঞ্জিনচালিত। এসব নৌযানের মাধ্যমে বছরে প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ মেট্রিক টন মাছ আহরণ করা হয়, যা আহরিত সামুদ্রিক মৎস্যের ৮১ দশমিক ৬৬ শতাংশ।